চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা, গণপদযাত্রা শেষে স্মারকলিপি প্রদান

কোটা সংস্কারে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে বিল পাসের জন্য ভারপ্রপ্ত জেলা প্রশাকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।ছবি: জুয়েল শীল

সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কারে এবার আইন প্রণয়ন চান আন্দোলনকারীরা। এ জন্য সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে আইন প্রণয়নের জন্য ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকের মাধম্যে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দিয়েছেন চট্টগ্রামের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বেলা একটার দিকে শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যম এ চিঠি দেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এর বাইরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। এতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দেওয়া পুলিশের মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ সকাল ১০টা থেকেই নগরের ষোলোশহর রেলস্টেশনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেড়ে আসা শাটল ট্রেন ষোলোশহরে পৌঁছালে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘ভয় দেখিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

পরে ষোলোশহর থেকে বেলা ১১টায় পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়ও তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। পদযাত্রাটি নগরের ষোলোশহর থেকে শুরু হয় দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, কাজীর দেউড়ি, লাভ লেন মোড় হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছায়। পরে শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মালেককে স্মারকলিপি দেয়। এরপর পদযাত্রা করে নগরের বটতলী রেলস্টেশনে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে গিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মালেক বলেন, শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে চিঠি (স্মারকলিপি) দিয়েছেন। তাঁরা চিঠি গ্রহণ করেছেন। এই চিঠি তাঁরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন।

এদিকে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়ে বের হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। স্মারকলিপি শুধু আমাদের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম ছিল।’

১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলনে আছেন কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানানো শিক্ষার্থীরা। ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। কিন্তু গত ৭ জুলাই থেকে তাঁরা এক দফা দাবির কথা বলছেন। দাবিটি হচ্ছে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করা। সব গ্রেডে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা।