পঞ্চগড়ে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ-অগ্নিসংযোগ, আহত অন্তত ৩০
পঞ্চগড়ের বোদায় জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে দুটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার ঝলইশালশিরি ইউনিয়নের চিড়াকুটি-আরাজি শিকারপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়িত অভিযোগে দুই পক্ষের অন্তত ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চিড়াকুটি-আরাজি শিকারপুর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য নজরুল ইসলাম ও তাঁর ভাই সাবেক ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী জিয়াউর রহমান, ইসমাইল হোসেন, হামিদুল ইসলাম, সামিউল ইসলামসহ গ্রামের আরও কয়েকজনের প্রায় ৩০ বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গতকাল এসব জমি দখলে নিতে মফিজুল ও নজরুল জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কিছু ভাড়াটে লোক নিয়ে এসেছিলেন। এসব ভাড়াটে লোকজন দুটি ট্রাক্টর নিয়ে ভুট্টাখেত ও বাদামখেতে চাষ দিতে যান। এ সময় তাঁরা ওই জমিতে জিয়াউরদের তোলা একটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন এবং ইসমাইল ও জিয়াউরকে মারধর করেন।
একপর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে কয়েকজন মারা গেছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লে ইসমাইল-জিয়াউরদের পক্ষ নিয়ে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী নজরুল ও মফিজুলদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ২২ জনকে আটক করেছে বোদা থানা-পুলিশ। এ ছাড়া মফিজুল ইসলামের পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে জমি চাষ করতে আনা দুটি ট্রাক্টর ও ভাড়াটে লোকজনের অন্তত পাঁচটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ।
আহত ব্যক্তিদের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাফিজুল ইসলাম (৩২) নামের একজনের শরীরের বিভিন্ন অংশ দগ্ধ হওয়ায় তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া মাসুদ রানা (২৬), আবদুর রহিম (৫৫) ও জুয়েল (৪৫) নামের তিনজনকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ জনকে আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। এদের মধ্যে কারা কোন পক্ষের, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মামলা হবে।’