হলফনামা বিশ্লেষণ
শাহরিয়ারের সম্পদ ২ কোটি থেকে বেড়ে ৮৯ কোটি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হতে চান, তাঁদের আয়-ব্যয় ও সম্পদের তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করেছে প্রথম আলো
ব্যবসা থেকে রাজনীতিতে আসা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের অস্থাবর সম্পদ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। নিজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বড় অঙ্কের যে ঋণ ছিল, তা–ও পরিশোধ করা হয়েছে। সম্পদ বেড়েছে প্রতিমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদেরও।
রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে প্রথম সংসদ সদস্য হন শাহরিয়ার আলম। হলফনামা অনুযায়ী, তখন তাঁর অস্থাবর সম্পদ (টাকা, সোনা, সঞ্চয়পত্র ইত্যাদি) ছিল ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা মূল্যের। মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ছিল ৬৯ কোটি টাকার বেশি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (২০২৪) প্রার্থী হতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দেওয়া হলফনামায় শাহরিয়ার আলম নিজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কোনো ঋণের কথা উল্লেখ করেননি। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর অস্থাবর সম্পদ আছে ৮৯ কোটি টাকার। ২০১৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল প্রায় ৬৬ কোটি টাকা মূল্যের।
হলফনামা বলছে, ২০০৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর কোনো স্থাবর সম্পদ (জমি, ভবন ইত্যাদি) ছিল না। এখন তাঁর ১৭ একরের কিছু বেশি কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে। রাজধানীর গুলশানে দুটি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক তিনি। রাজশাহীতে চারতলা একটি ভবন (কার্যালয় ও বাসা) নির্মাণ করছেন তিনি।
শাহরিয়ার আলম ২০১৪ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এর পর থেকে তিনি সেই দায়িত্বেই রয়েছেন। তিনি রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
শাহরিয়ার আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জনকারী। তাঁর নামে কোনো মামলা নেই। পেশা হিসেবে তিনি ব্যবসা উল্লেখ করেছেন। জানিয়েছেন, তিনি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারধারী।
শাহরিয়ার আলমের আয় কৃষি, স্থাপনার ভাড়া, ব্যবসার লভ্যাংশ ও ব্যাংক আমানতের সুদ এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পাওয়া সম্মানী। এবার তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন প্রায় ৭ কোটি ৯৩ লাখ লাখ টাকা। এই আয় ২০০৮ সালে অনেক কম ছিল। তখন তিনি আয় দেখিয়েছিলেন প্রায় ৯৮ লাখ টাকা।
২০১৩ সালে প্রতিমন্ত্রীর আয় বেড়ে ১৪ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ২০১৮ সালে কমে হয় সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো। এখন আবার আয় বেড়েছে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যবসার আয়ের ওপরই প্রতিমন্ত্রীর আয় ওঠানামা করেছে।
প্রতিমন্ত্রী ২০১৪ সালে ৩১ কোটি ১৯ লাখ ও ২০১৮ সালে ৬৫ কোটি ৭২ লাখ অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন, যা এখন ৮৯ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তাঁর নগদ ও ব্যাংকে টাকা আছে ২১ কোটি ৪৫ লাখ। বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ারের মাধ্যমে বিনিয়োগ দেখিয়েছেন ৬৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা।