বৈরী আবহাওয়ায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ, সতর্কতার সঙ্গে চলছে ফেরি

ঘাটে লঞ্চ নোঙর করে রাখা হয়েছে। আজ রোববার সকালে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটেছবি: এম রাশেদুল হক

বৈরী আবহাওয়ায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ আছে। আর প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর গতকাল সকাল সাড়ে আটটা থেকে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করছে ফেরি।

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, রাজবাড়ীর ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অনেকটাই ফাঁকা। মাঝেমধ্যে যাত্রীবাহী দু–একটি যানবাহন চলাচল করলেও যাত্রী তেমন নেই। লঞ্চ বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া ঘাটের পন্টুনে বসে চালক, সারেং, ইনচার্জ ও কর্মচারীরা বসে অলস সময় পার করছেন। পন্টুনে বাঁধা চার থেকে পাঁচটি লঞ্চ। এর বাইরে পদ্মা নদীর পাড় ঘেঁষে রাখা হয়েছে আরও কয়েকটি লঞ্চ।

পন্টুনে বসে থাকা এমভি আমানত লঞ্চের মাস্টার নাসির উদ্দিন বলেন, আবহাওয়া খারাপ থাকায় সরকারি নির্দেশনা মেনে গতকাল বেলা ১১টার পর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ আছে। ঘাটে লঞ্চ রেখে বৈরী আবহাওয়ায় কোথাও যেতে পারছেন না। তাই পন্টুনে বসেই সময় পার করছেন। কোনো যাত্রী এলে নদী পাড়ি দিতে ফেরিতে ওঠার পরামর্শ দিচ্ছেন।

আরেকটি লঞ্চের সারেং জানান, বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস বেশি থাকলে লঞ্চগুলো পন্টুনের সঙ্গে বারবার আঘাত লাগে। যে কারণে অনেকে লঞ্চ পাশে পদ্মা নদীর পাড় ঘেঁষে বেঁধে রেখেছেন। এমন পরিস্থিতিতে কোথাও যেতে পারছেন না। তাই পন্টুনে বসে সময় কাটাচ্ছেন। পরিস্থিতি ভালো হলে লঞ্চ চালু হবে।

পন্টুনের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সারেং হেকমত আলী বলেন, গত শুক্রবার রাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল। পরদিন শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে লঞ্চ চালু হয়। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে সব কটি লঞ্চ চালু ছিল না। পরে সকাল ১০টার দিকে পাটুরিয়া থেকে লঞ্চে নদী পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়ায় আসেন। এর কিছুক্ষণ পর থেকে এই রুটে সব লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়।

ফেরি চললেও মাঝেমধ্যে বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো বাতাসে নৌকার মতো দুলতে থাকে। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে অনেক যাত্রীকে ফেরিতে নদী পাড়ি দিতে দেখা যায়। রাজবাড়ীর পাচুরিয়া থেকে আসা ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, জরুরি কাজে তিনি মানিকগঞ্জ যাচ্ছেন। রাস্তায় গাড়ি কম থাকায় বেশি ভাড়া দিয়ে মাহেন্দ্রতে ঘাটে আসতে হয়েছে।

মাহেন্দ্রচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল ৯টায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর দুই ঘণ্টায় মাত্র ৫০ টাকা রোজগার করেছেন। যাত্রী না পেয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। বৃষ্টি ও বাতাসের মধ্যে সহজে কেউ বের হচ্ছেন না। এভাবে চললে দিন শেষে মহাজনের ভাড়াই কী দেবেন আর নিজেরই থাকবে কী?

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক সালাহ উদ্দিন বলেন, ঝড়ের কারণে গতকাল ভোর চারটার পর থেকে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত সাড়ে চার ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এর পর থেকে সতর্কতার সঙ্গে ফেরি চলছে। দৌলতদিয়া প্রান্তে ৩, ৪ ও ৭ নম্বর—এই তিন ঘাট দিয়ে ফেরিতে যানবাহন পারাপার হচ্ছে।