ছাত্রলীগের সংঘর্ষকালে পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
বরগুনায় জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষকালে পুলিশের করা লাঠিপেটার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর প্রধান করা হয়েছে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এস এম তারেক রহমানকে।
আজ মঙ্গলবার সকালে বরগুনা জেলা পুলিশ এই কমিটি গঠন করে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) তোফায়েল আহমেদ সরকার ও জেলা পুলিশ কার্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাবুদ্দীন খান।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল সোমবার বরগুনা শহরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে ফিরছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও তাঁদের সমর্থকেরা। দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে জেলা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত একটি পক্ষ শিল্পকলা একাডেমির ছাদ থেকে তাঁদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে তাঁদের ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ প্রসঙ্গে গতকাল রাতে জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের উদ্দেশ্যই ছিল মারপিট করা। এ সময় তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহরম আলীকে বরখাস্তের দাবি জানান।
এদিকে গতকাল রাত ১০টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান সংবাদ সম্মলেন করে বলেন, ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা তাঁদের ওপরে হামলা করেছিলেন। পুলিশ না থাকলে বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটতে পারত।
জানতে চাইলে আজ সকালে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মেহেদী হাচান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
৮ বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজউদ্দীন টাউন হল মিলনায়তনে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৪ জুলাই রাতে জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ৩৩ সদস্যের ওই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিত নেতারা বিক্ষোভ করে আসছেন।
জেলা ছাত্রলীগের এ কমিটি প্রসঙ্গে রাতে শোক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ‘আমাদের পরামর্শ ছাড়াই জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের আগে কাউন্সিল বাধ্যতামূলক—এ কমিটি দেওয়ার আগে সেটাও করা হয়নি।’