সিরাজগঞ্জে একই পরিবারের তিনজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তির শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় একই পরিবারের তিনজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত উপজেলা সদরের তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন নিহত স্কুলছাত্রী পারমিতা সরকার ওরফে তুশির সহপাঠী, তার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলী আহসান, সহকারী শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম, আফরোজা খাতুন, রওশন আরা খাতুন, মো. আনিছুর রহমান, শিক্ষার্থী অর্পিতা সূত্রধর, কাঁকন ঘোষ, জয়িতা ঘোষ, মাহিয়া মাহি, অন্তরা রানী প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বিকাশ সরকার (৪৫), তাঁর স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৪০) ও তাঁদের একমাত্র সন্তান পারমিতা সরকারের হত্যাকাণ্ডে জড়িত রাজীব কুমার ভৌমিকের (৩৫) ফাঁসির দাবি জানান। পারমিতা সরকারকে স্মরণ করে মানববন্ধনে কান্নায় ভেঙে পড়ে তার সহপাঠী অর্পিতা সূত্রধর, কাঁকন ঘোষ, জয়িতা ঘোষ, মাহিয়া মাহিসহ আরও অনেকে।
গত সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাড়াশ উপজেলা সদরের বারোয়ারি বটতলা মহল্লার তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে বিকাশ, তাঁর স্ত্রী স্বর্ণা ও তাঁদের একমাত্র সন্তান তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারমিতার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার নিহত বিকাশের ভাগনে রাজীব কুমার ভৌমিক পুলিশের কাছে তিনজনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশ ও স্বজনদের ভাষ্য, গত রোববার রাত থেকে সোমবার রাতের কোনো এক সময় তিনজনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এরপর হত্যাকারী বাইরে থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।
এ ঘটনায় নিহত স্বর্ণার বড় ভাই সুকোমল চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাড়াশ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার একমাত্র আসামি বিকাশ সরকারের ভাগনে রাজীব কুমার ভৌমিককে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান। সেখানে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টিও জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার রাজীব কুমার ভৌমিক সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রাজীবের মা প্রমীলা রানী নিহত বিকাশ সরকারের বোন। রাজীব তাঁর মামা বিকাশ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে ব্যবসা করতেন। ব্যবসার টাকা লেনদেন নিয়ে রাজীব এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।