নান্দাইলে রেললাইন কেটে দিল দুর্বৃত্তরা
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় ভৈরব-ময়মনসিংহ রেললাইনের প্রায় ১৮ ইঞ্চি কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে উপজেলার মুশুলি ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কাটা অংশ ফেলে দিয়ে ১৮ ফুটের একটি রেলের পাত সেখানে প্রতিস্থাপন করেছেন রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের লোকজন।
রেললাইন কাটার ঘটনাটি জানার পর উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটির গতি কমিয়ে (ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার) বিশেষ ব্যবস্থায় রেললাইনের কাটা অংশ অতিক্রম করার ব্যবস্থা করা হয়। পরে রেলপথের কাটা অংশ মেরামত করেন রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল মুঠোফোনে প্রথম আলাকে বলেন, মুশুলি ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের মাধ্যমে তিনি ঘটনাটি জানতে পারেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে বুঝতে পারেন, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত নাশকতামূলক কাজ। ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়লে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নান্দাইলের মোহনপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথটি চলে গেছে। রেললাইনের যে অংশটি কাটা হয়েছে, তা নির্জন এলাকায় অবস্থিত। গ্রামবাসী সেদিকে তেমন যান না। এ ছাড়া রেলপথ দিয়ে সারা দিনে মাত্র দুটি ট্রেন আসা-যাওয়া করে। একটি নাসিরাবাদ মেইল ও অন্যটি বিজয় এক্সপ্রেস।
গ্রামবাসী জানান, আজ বিকেলে কিশোরগঞ্জের নীলগঞ্জ এলাকার একটি মাঠে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়। ওই খেলা দেখতে রেললাইনের ওপর যাচ্ছিলেন মোহনপুরসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন। তখন তাঁরা রেললাইন কাটা অবস্থায় দেখতে পান। বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যকে জানানোর পর তিনি ঘটনাটি থানা ও প্রশাসনকে জানান।
খবর পেয়ে নান্দাইলের ইউএনও অরুণ কৃষ্ণ পাল, জাতীয় নিরাপত্তা পরিদপ্তরের (এনএসআই) ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক ফকির, রেলওয়ের পিডব্লিউআই মো. রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। আজ রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের কর্মীরা রেললাইন মেরামতের কাজ করছিলেন।
রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস (নাসিরাবাদ মেইল) ট্রেনটি সকাল সাতটার দিকে ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি একই গন্তব্যে রাত সাড়ে আটটার দিকে ছেড়ে যায়। অন্যদিকে ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহে ফেরে শেষ রাতের দিকে। অন্যদিকে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ময়মনসিংহে ফেরে। বিকেল চারটার আগে প্রশাসনের লোকজন মোহনপুর গ্রামে উপস্থিত থাকায় বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায়।