ময়মনসিংহে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে হিন্দুদের ৫টি দোকানে তালা দিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগ
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় এক হিন্দু পরিবারের পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এ নিয়ে আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই দোকানঘরগুলো উপজেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম ওরফে টিটু দখলে নিয়েছেন বলে তাঁরা জানান।
ধোবাউড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অতুল সরকার, তাঁর ভাই অখিল সরকার ও ভাতিজা পলাশ সরকার উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অতুল সরকার। তিনি বলেন, ধোবাউড়া সদর বাজারের পঞ্চনন্দপুর মোড়ে তাঁদের পরিবারের পাঁচটি দোকান রয়েছে। নিজেদের কেনা জমিতে দোকান নির্মাণ করে ১৯৯৭ সাল থেকে তাঁরা দোকান করে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৬ আগস্ট উপজেলা বিএনপি নেতা (যুবদল নেতা) কবিরুল ইসলাম ওরফে টিটু তাঁর কয়েকজন সহযোগী নিয়ে এই পাঁচটি দোকানঘরে জেরপূর্বক তালা লাগিয়ে দেন। কবিরুল এসব দোকানের জমির মালিকানা দাবি করে দোকানের সামনে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন।
অতুল সরকার বলেন, ‘দোকানগুলো জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছি। ওই দোকানগুলো নিয়ে এর আগেও সমস্যা করেছিলেন কবিরুল। ২০০৮ সালে একবার তাঁর মালিকানা দাবি করার ঘটনায় এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হয়েছিল। ওই সালিসে দুই পক্ষের কাগজপত্র দেখে জমি আমাদের বলে সিদ্ধান্ত দেন সালিসকারীরা। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জোরপূর্বক আমাদের দোকানগুলো দখল করেন কবিরুল। বর্তমানে আমরা অতি কষ্টে দিন যাপন করছি। বিচারের আশ্বাস দিয়ে একটি পক্ষ নানা টালবাহানা করছে।’
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৯৯৭ সালে অতুল সরকার, অখিল সরকার, অনিল সরকার তিন ভাই মৃত শাহেদ আলী মুন্সির কাছ থেকে ১৫ শতক জমি কেনেন। ওই বছর থেকেই কেনা জমিতে পাঁচটি দোকানঘর করে নিজেরা ব্যবসা করছেন এবং দুটি দোকান ভাড়া দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু ২০০৮ সালে সেখানে ৩ শতক জমি কিনেছেন দাবি করে যুবদল নেতা কবিরুল দখলে নিতে যান। কিন্তু সে সময় এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিসে হলে কবিরুল কোনো জমি পাননি।
অতুল সরকার বলেন, ‘আমরা প্রকৃত মালিকের (মৃত শাহেদ আলী মুন্সি) কাছ থেকে জমি কিনলেও পরে তাঁর একজন ওয়ারিশানের কাছ থেকে একটি দলিল করে আমাদের জমি দখল করতে চেয়েছিল কবিরুল। আগে না পারলেও সরকার পরিবর্তনের পর আমাদের দোকানগুলো দখল করে নিয়েছে।’
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘জমির প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে ২০০৮ সালে তিন শতক জমি কিনেছিলাম। সেই জমিতেই পাঁচটি দোকান আমার। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেগুলো দখলে রাখা হয়েছিল। সে সময় সালিস হলেও আমি সে সালিস মানিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়নি। সংখ্যালঘুর ওপর অত্যাচার করি না। বরং তাঁদের সহযোগিতা করছি। আওয়ামী লীগ-বিএনপি মিলেই কাজ করছি। এ নিয়ে আমিও সংবাদ সম্মেলন করব। আমার সব কাগজপত্র রয়েছে।’