দুই দশক পর যশোরের সন্ত্রাসী ‘ফিঙে’ লিটনের আদালতে আত্মসমর্পণ
পলাতক থাকা যশোরের আলোচিত সন্ত্রাসী আনিসুর রহমান লিটন ওরফে ফিঙে লিটন দুই দশক পর দেশে ফিরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে গোপনীয়তার মধ্যে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
যশোর আদালত পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকসানা খাতুন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালে অস্ত্র আইনের একটি মামলায় লিটনের ১০ বছরের সাজা হয়। এর পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। ওই মামলায় আজ আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিনের আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আনিসুর রহমান লিটন যশোর শহরের বারান্দীপাড়া এলাকার বদর উদ্দিনের ছেলে। যশোরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তিনি ‘ফিঙে’ লিটন নামে পরিচিত। অস্ত্র, হত্যা, চাঁদাবাজিসহ ২০ থেকে ২২টি মামলা মাথায় নিয়ে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি বিদেশে পলাতক ছিলেন। এ সময় তিনি ভারত, নেপাল, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতারসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেছেন বলে জানা গেছে।
বিদেশে থাকলেও লিটন ট্রাভেল পরিবহনসহ দেশে ব্যবসা–বাণিজ্য প্রসারের পাশাপাশি স্ত্রী ফাতেমা আনোয়ারকে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় করেন। লিটন একসময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও তাঁর স্ত্রী সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক হন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বজন নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। ফাতেমা আনোয়ার গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাড়া ফেলেন।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরাও শুনি ফিঙে লিটন ইন্টারপোলের মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি। কিন্তু আমাদের কাছে তাঁর সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে কোতোয়ালি থানায় তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। সব মামলার তথ্য আপডেট নেই। কারণ, এসব মামলা ২০ বছর আগের। তখন সবকিছু ম্যানুয়াল ছিল। এ জন্য পুরোনো সব মামলার তথ্য আপডেট করা নেই। নতুন করে সব মামলার নথিপত্র খুঁজতে হচ্ছে।’