বগুড়া থেকে রাজশাহীর গণসমাবেশে যোগ দেবেন বিএনপির ৬০ হাজার নেতা-কর্মী
রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে বগুড়া থেকে অন্তত ৬০ হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটাতে চায় জেলা বিএনপি। কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়ে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে গণজোয়ার সৃষ্টি করবেন বলে আশাবাদী দলটির নেতারা। এ জন্য বগুড়ায় সর্বাত্মক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সমাবেশ সফল করতে ইতিমধ্যে সংসদীয় আসনভিত্তিক উপকমিটি গঠন করেছে বিএনপি। প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটের নেতাদের জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দফায় দফায় বৈঠক করে নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছেন কমিটির সদস্যরা। আজ বগুড়া শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে প্রচারপত্র বিলি করেছেন নেতা-কর্মীরা।
মহাসড়কে নছিমন-করিমনসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ ও কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে রাজশাহী বিভাগে ১ ডিসেম্বর থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে বিভাগীয় মালিক-শ্রমিক যৌথ কমিটি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বলেন, রাজশাহীর গণসমাবেশে লোকসমাগমে বাধা দিতে মালিক-শ্রমিকদের দিয়ে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এর বাইরে বগুড়ার ১২ উপজেলায় হাজারের বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ১২টি ‘গায়েবি’ মামলা করা হয়েছে। তবে কোনো বাধাই কাজে আসবে না। সব ষড়যন্ত্র ও বাধা মোকাবিলা করে রাজশাহীর কর্মসূচিতে বগুড়া থেকে অন্তত ৬০ হাজার মানুষ অংশ নেবেন।
জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিভাগীয় গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এর আগে একই দাবিতে ময়মনসিংহ, খুলনা, চট্টগ্রাম, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লায় বিভাগীয় সমাবেশ করেছে বিএনপি।
দলীয় সূত্র জানায়, রাজশাহীর সমাবেশকে সামনে রেখে ১৭ নভেম্বর থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ দিনে বগুড়ার ১২টি থানায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি ৫২২। অজ্ঞাতনামা আসামি পাঁচ শতাধিক। গ্রেপ্তার হয়েছেন ২০ জন। এর মধ্যে বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলায় পুলিশের ওপর ককটেল হামলার অভিযোগ এনে বিস্ফোরক দ্রব্য এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে। এসব মামলার বাদী পুলিশ। আর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের মিছিলে ককটেল হামলার অভিযোগে শেরপুর, ধুনট, নন্দীগ্রাম, কাহালু, আদমদীঘি, শিবগঞ্জ ও গাবতলী উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার বলেন, প্রতিটি সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে জনতার স্রোত আটকানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সরকার সফল হয়নি। রাজশাহীর সমাবেশকে সামনে রেখে বগুড়ায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ একজোট হয়ে মামলা দিয়েছে। ১০ দিনে ২০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে কোনো ষড়যন্ত্রই রাজশাহীর সমাবেশে জনস্রোত আটকাতে পারবে না।
আলী আজগর তালুকদার আরও বলেন, দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়া বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। রাজশাহীর সমাবেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ বগুড়া থেকে যোগ দেবেন। তাঁরা ৬০ হাজার মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিতের প্রস্তুতি নিলেও বগুড়া থেকে লক্ষাধিক মানুষ রাজশাহী যাবে।