বেনাপোল হয়ে ৬ দিনে ভারত থেকে এল ৮৩০ মেট্রিক টন চাল, লোকসানের শঙ্কায় আমদানিতে আগ্রহ কম
গত ছয় দিনে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৮৩০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। তবে দেশীয় বাজারে পাইকারি ও খুচরা মূল্যের চেয়ে আমদানি মূল্য বেশি পড়ায় চাল আমদানিতে আগ্রহ কম ব্যবসায়ীদের।
আমদানিকারকেরা জানান, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ভারত থেকে মোটা চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ২ শতাংশ শুল্কে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব চাল আমদানি করতে হবে। কিন্তু দেশীয় বাজারে পাইকারি দামের তুলনায় ভারতের বাজার থেকে আমদানি করা চালের দাম বেশি পড়ছে। এতে লোকসানের মুখে পড়ার শঙ্কায় চাল আমদানিতে আগ্রহ কমেছে আমদানিকারকদের।
বেনাপোল স্থলবন্দর ও কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, ১৮ থেকে আজ ২৩ নভেম্বরের মধ্যে ২৪টি ট্রাকে ভারত থেকে মোট ৮৩০ দশমিক ৪ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ শনিবার সর্বশেষ আমদানি হয়েছে ১০৫ মেট্রিক টন স্বর্ণা (মোটা) চাল। শুল্কায়ন শেষে আগামীকাল এসব চাল বন্দর ছেড়ে যাবে।
যশোরের শার্শা উপজেলার চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অর্ক ট্রেডিং দুই হাজার মেট্রিক টন আতপ ও তিন হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ মোটা চাল আমদানির অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে ১০০ মেট্রিক টন সেদ্ধ স্বর্ণা চাল ইতিমধ্যে এই প্রতিষ্ঠান আমদানি করেছে। যার প্রতি কেজি আমদানি মূল্য পড়েছে ৫১ টাকা। শুল্কসহ অন্যান্য খরচ দেড় থেকে দুই টাকা। অর্থাৎ ৫৩ টাকা প্রতি কেজির দাম পড়েছে। অথচ দেশীয় বাজারে এই স্বর্ণা চাল আজ ৫০ টাকা কেজি পাইকারিতে বেচাকেনা হয়েছে।
অর্ক ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘৫৩ টাকা কেজি মোটা চাল আমদানি করেছি। পরে দেখি, দেশীয় বাজারে মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে কেজিতে এক টাকা লোকসানে ৫২ টাকা কেজি চাল বিক্রি করতে হয়েছে। যে কারণে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়তো সম্ভব হবে না।’
যশোরের স্থানীয় চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ শনিবার সেদ্ধ স্বর্ণা মোটা চাল ৫০ টাকা পাইকারি দামে আড়তে বেচাকেনা হয়েছে।
যশোর বড় বাজারের সবচেয়ে বড় চালের আড়ত এলিট রাইসের স্বত্বাধিকারী মুল্লুক চাঁদ বলেন, আজ শনিবার হীরা হাইব্রিড মোটা চাল ৪৮ টাকা ও স্বর্ণা মোটা চাল ৫০ টাকা কেজি পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে। নতুন ধানের চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। এখন থেকে চালের দাম কমতে থাকবে। যদিও এবার অতিবৃষ্টির কারণে চালের উৎপাদন কমেছে। সে ক্ষেত্রে চাল আমদানির প্রভাবও বাজারে থাকবে।