নোয়াখালীতে ওরসের অনুষ্ঠানে হামলা, মাজার ভাঙচুর
নোয়াখালীর সদর উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়নের একটি মাজারে বার্ষিক ওরস চলার সময় হামলা চালিয়ে প্যান্ডেল ও মাজারের মূল ঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শাহ সুফি আইয়ুব আলী দরবেশের মাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে একদল লোক সেখানে হামলা চালায়।
হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হলেও তাঁদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), সুধারাম থানা-পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ নিয়ে চার দিনের মধ্যে নোয়াখালীতে দুটি মাজার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটল। এর আগে গত সোমবার বিকেলে জেলার চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের ঘাসিপুর গ্রামের ব্যাপারী বাড়ি মসজিদের কাছে ‘ঘাসিপুর দরবার শরিফ’ নামে একটি মাজার ভাঙচুর করে একদল লোক। ওই ঘটনায় মাজার কর্তৃপক্ষ চাটখিল থানায় একটি মামলা করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদর উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়নের মুন্সির তালুক গ্রামের শাহ সুফি আইয়ুব আলী দরবেশের মাজারে আজ বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনব্যাপী ওরস অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। বেলা তিনটার দিকে কয়েক শ লোক লাঠিসোঁটা ও শাবল নিয়ে মাজারে হামলা-ভাঙচুর চালান। এর আগে মাজার ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির খবর পেয়ে জেলা শহর থেকে সেনাবাহিনীর সদস্য, সুধারাম থানার পুলিশ এবং সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নিষেধ উপেক্ষা করে তাঁদের সামনেই লোকজন মাজারটিতে ভাঙচুর চালান।
মাজারের তত্ত্বাবধায়ক মো. জামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতার ইন্ধনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে একদল লোক মাজারে হামলা-ভাঙচুর করেছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ নেওয়াজ তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সময় তিনি সেখানে ছিলেন না, খবর পেয়ে পরে গেছেন। ওরসের কোনো পূর্ব অনুমতি নেওয়া হয়নি। ওরস করার জন্য কিছু কাঠামো তৈরি করা হয়েছিল। সেগুলো লোকজন ভেঙে দিয়েছে। একই সঙ্গে মাজারের পাশে ইটের তৈরি যে দেয়াল ছিল, সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
জানতে চাইলে মাজারে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা নিশ্চিত করেন সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মাজার নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু সেখানে উপস্থিত দেড়-দুই হাজার মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো পরিবেশ ছিল না। তবে বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে।