নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে আবার হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া এলাকায় পোশাককর্মী বদিউজ্জামানকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
আজ শনিবার দুপুরে নিহত বদিউজ্জামানের স্ত্রী আদুরী খাতুন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন। এ নিয়ে আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় ১৯টি হত্যাসহ মোট ২৩টি মামলা করা হলো। এর মধ্যে ১৫টি হত্যাসহ ১৬টি মামলায় শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত বদিউজ্জামান রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার মাঝপাড়া এলাকার মো. আজগর আলীর ছেলে। তিনি নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলায় তিনি নিহত হন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এক জোট হয়ে পিস্তল, শটগান, ককটেল, লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার এলাকায় যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ও জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেন। শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও শামীম ওসমানের নির্দেশে আসামিরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলি করেন। বাদীর ফুফাতো দেবর স্বাধীন মিয়া ও স্বামী বদিউজ্জামান শহরের হাজীগঞ্জ এলাকার বাড়িতে ফেরার পথে চাষাঢ়া গোল চত্বর এলাকায় এলে আসামিরা দেশি অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে তাঁদের পেটান। এতে তাঁর স্বামী বদিউজ্জামান লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে থাকা স্বাধীন মিয়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাঁদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বদিউজ্জামানকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানির পর আসামিরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাপ দেন। বাদীর দেবর স্বাধীন মিয়া আতঙ্কিত হয়ে লাশ গ্রামের বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া থানার মাঝপাড়ায় নিয়ে যান। সেখানে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়। শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁদের ইন্ধনে শামীম ওসমানের হুকুমে আসামিরা তাঁর স্বামীকে সংঘবদ্ধভাবে হত্যা করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।