ট্রেনের ধাক্কায় ‘নিহত’, লাশ দাফনের দেড় মাস পর জীবিত ফিরে এসেছে কিশোর তোফাজ্জেল

বাবা- মা ও ভাইয়ের সঙ্গে কিশোর তোফাজ্জেল। শনিবার দুপুরে আলমডাঙ্গার বৈদ্যনাথপুর গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বৈদ্যনাথপুরের কিশোর তোফাজ্জেল হোসেন ওরফে তুফান (১৪) পরিবারের সদস্যদের কাউকে না জানিয়ে কাজের সন্ধানে ১৫ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বের হয়। ছেলের হঠাৎ নিরুদ্দেশ হওয়ায় উদ্বিগ্ন মা–বাবা ২৪ জানুয়ারি আলমডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এলাকার হাসপাতাল-ক্লিনিকে খোঁজ করলেও মেলেনি তার খোঁজ। তোফাজ্জেলের খোঁজ পেতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চালানো হয় প্রচারণা।

এর মধ্যে গাইবান্ধার কামারপাড়ায় বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় আহত হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ ফেব্রুয়ারি এক কিশোর মারা যায়। তার সঙ্গে তোফাজ্জেলের চেহারার মিল থাকায় মরদেহ বৈদ্যনাথপুর গ্রামে নিয়ে এসে দাফন করেন তার আত্মীয়স্বজন। লাশটি দাফনের প্রায় দেড় মাস পর শুক্রবার বাড়ি ফিরেছে তোফাজ্জেল। বিষয়টি সবাইকে অবাক করেছে।

তোফাজ্জেল হোসেন বৈদ্যনাথপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান ও আমেনা খাতুন দম্পতির দুই ছেলের মধ্যে ছোট। সরেজমিনে জানা যায়, তোফাজ্জেল চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি বাড়ি থেকে কাজের সন্ধানে বের হয়। এ ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় একটি জিডি করেন বাবা সাইদুর রহমান। ছেলের সন্ধানে ফেসবুকেও প্রচারণা চালানো হয়েছে। গাইবান্ধায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মুমূর্ষু এক কিশোরের চেহারা হুবহু মিলে যাওয়ায় তোফাজ্জেলের বাবা সাইদুর রহমান ও মা আমেনা খাতুন নিজেদের সন্তান ভেবে তার চিকিৎসা প্রদান করেন। গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ ফেব্রুয়ারি মারা যায় ওই কিশোর। পরে নিহতের মরদেহ বৈদ্যনাথপুরে গ্রামে দাফন করা হয়।

এদিকে শুক্রবার তোফাজ্জেল বাড়িতে ফেরার পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের বরাতে জানা যায়, কাজের সন্ধানে বাসে করে ঢাকায় গিয়ে সদরঘাটে কুলি ও শ্যামলীতে রডমিস্ত্রির কাজ করেছে তোফাজ্জেল। শুক্রবার ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছে সে। এতে উচ্ছ্বসিত তোফাজ্জেলের মা–বাবা। বাবা সাইদুর রহমান জানান, তোফাজ্জেল হিসেবে দাফন করা কিশোরের পরিচয় পাওয়া জরুরি। এ জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) কনক কুমার দাস জানান, যেহেতু তোফাজ্জেল ফিরে এসেছে, তাই দাফন করা কিশোরের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ টেস্ট করা হবে।