স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনে প্রস্তুত সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ
৫৫তম মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদ্যাপনে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ২৬ মার্চ বুধবার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো মানুষের ঢল নামবে স্মৃতিসৌধে। ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদি। এ লক্ষ্যে স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে।
স্মৃতিসৌধ–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের অন্যান্য সদস্য ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এরপর স্মৃতিসৌধ সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
সবুজে ঘেরা ১০৮ হেক্টর জমির ওপর নির্মিত স্মৃতিসৌধে সৌন্দর্যবর্ধনসহ নানা কাজ সম্পন্ন করেছেন সাভার গণপূর্ত বিভাগের কর্মীরা। রোববার স্মৃতিসৌধ চত্বর ঘুরে দেখা যায়, স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন গণপূর্ত বিভাগের কর্মীরা। এঁদের মধ্যে কয়েকজন মিলে সড়কের পাশে ফাঁকা জায়গায় পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘাসের চারা রোপণ করছেন। স্মৃতিসৌধ চত্বর পানি দিয়ে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে, রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বেদিসংলগ্ন সিঁড়িগুলো। সবুজ ঘাসের গালিচা কেটেছেঁটে নান্দনিক করে তোলা হচ্ছে। পুরোনো ফুলের গাছগুলোকে পরিচর্যা করার পাশাপাশি রোপণ করা হয়েছে নানা জাতের ফুলের গাছ। ভবনের দেয়ালে ঝোলানো হয়েছে বর্ণিল আলোকবাতি।
স্মৃতিসৌধ চত্বরে ফুলের চারা রোপণ করছিলেন আবদুল মতিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে শহীদদের কবরস্থান আছে। এটি দেশের স্বাধীনতার স্মৃতিস্তম্ভ। এখানে কাজ করতে আমার কাছে ভালোই লাগে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে কাজ করছি।’
জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পুরো স্মৃতিসৌধ চত্বর ধুয়ে মুছে পরিষ্কার-পরিপাটি করা হয়েছে। পুরো চত্বরে ফুল দিয়ে সাজানো, রং–তুলির কাজ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, আলোকসজ্জা, লেক সংস্কারসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রায় দেড় মাস ধরে চলা এ কার্যক্রমে শতাধিক কর্মী অংশ নিয়েছেন। নিরাপত্তার লক্ষ্যে ১৬ মার্চ থেকে স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সংরক্ষিত করা হয়েছে। ২৬ মার্চ রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদন নির্বিঘ্ন করতে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা। ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির প্রথম আলোকে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের লক্ষ্যে প্রায় চার হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সাভার উপজেলার আমিন বাজার থেকে শুরু করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ১২টা সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। সেক্টর অনুসারে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এই পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ২৬ মার্চ ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে এই মহাসড়কে দিয়ে চলাচলকারী গাড়ি না ছাড়ার জন্য পরিবহনমালিকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে। সকাল সাড়ে সাতটার পর মহাসড়কের এই অংশটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এই সময়ে পরিবহনচালকদের প্রতি বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ থাকবে।