ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহে রাতভর যানজট, এখন চলছে থেমে থেমে
ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে রাতভর ছিল যানজট। আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ভোগড়া বাইপাস ও চন্দ্রা ত্রিমোড়কে কেন্দ্র করে তিন দিকেই কয়েক কিলোমিটারজুড়ে যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে। এসব এলাকায় থেমে থেমে যানবাহন চলছে।
অপর দিকে মহাসড়কে পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় বাসস্ট্যান্ডগুলোতে শত শত ঘরমুখী মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়েও মিলছে না চাহিদামতো পরিবহন। এর ফলে ঝুঁকি নিয়েই মানুষ ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ নানা উপায়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
হাইওয়ে পুলিশ, যাত্রী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ছিল স্বাভাবিক। তবে গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার পোশাক তৈরির কারখানার ছুটি ঘোষণা হলে দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে ঘরমুখী মানুষের ঢল নামে। অতিরিক্ত মানুষ আর যানবাহনের চাপে বিকেলেই শুরু হয় যানজট। ইফতারের পর সেই যানজট আর মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করে। এরপর থেমে থেমে যানবাহন চললেও আজ ভোর পর্যন্ত একই অবস্থা দেখা যায় মহাসড়ক দুটিতে।
তবে আজ সকাল ৯টার পর থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হলেও কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ও আশপাশ এবং গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়াসহ আশপাশের এলাকায় থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। এসব এলাকায় আজও শত শত ঘরমুখী মানুষের ভিড় দেখা গেছে। তবে তাঁরা চাহিদামতো পরিবহন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া এই সুযোগে কিছু অসাধু পরিবহন ব্যবসায়ী, চালক ও সহযোগীরা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছেন কয়েক গুণ বেশি ভাড়া।
ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকার মো. আলভী রহমান বলেন, ‘গতকাল শুনতে পেয়েছি সড়কে অনেক যানজট ছিল, তাই বাসা থেকে বের হইনি। আজ সকালে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এসে দেখি, প্রায় একই অবস্থা। কোনো বাসেই সিট পাচ্ছি না। দাঁড় করিয়ে নিচ্ছে না। প্রায় দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। কিছু না পেলে বাধ্য হয়ে ট্রাকে উঠে যেতে হবে।’
অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করে কারখানাশ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তায় গাড়ি আছে, কিন্তু সেগুলো ঢাকা থেকেই যাত্রী নিয়ে ভরে আসছে। গাজীপুরে অনেক গাড়ি থামছে না। যেগুলো থামছে, সেগুলোতেও বেশি ভাড়া নিচ্ছে।’
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় দেখা যায়, শত শত ঘরমুখী মানুষ নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় আছেন। সেখানে থাকা বাস কাউন্টারগুলোতে বসে আছেন অনেকে। তবে এখানকার যাত্রীরা অধিকাংশ ট্রাক ও পিকআপে উঠে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এর কারণ যানতে চাইলে রাজশাহীর বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল হাদি বলেন, ‘বাসে জনপ্রতি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার কমে ওঠা যাচ্ছে না। তা–ও আবার সেই বাসের মানও ভালো না। এসব বাসের থেকে ট্রাকই আরামদায়ক, ভাড়াও কম।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত রাতে বেশ যানজট থাকলেও রাত দুইটার পর থেকে আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। তবে সকাল থেকে আবার যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এখন চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহনের জটলা আছে।’
নাওজোড় হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, চন্দ্রাকে কেন্দ্র করে সারা রাত যানবাহনের ধীরগতি থাকলেও সকালে কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এখন আশপাশে যানবাহনের সারি থাকলেও থেমে থেমে যানবাহন চলছে।