জামালপুরে বোনকে হত্যার দায়ে ভাইয়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় ১৬ মাস বয়সী বোনকে ডোবার পানিতে ফেলে হত্যার দায়ে ভাইয়ের আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খান এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তাঁকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়।
দণ্ড পাওয়া ওই ব্যক্তি হলেন ইন্দ্রজিৎ ঘোষ (২৪)। তিনি উপজেলার শিমলা গোপীনাথ এলাকার পরিতোষ চন্দ্র ঘোষের ছেলে। মামলার অন্য আসামি আনন্দ মহন্তকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নির্মল কান্তি ভদ্র বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক। রায়ে এক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অন্য আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের পর আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত ও মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে পারিবারিক কলহের জেরে ১৬ মাস বয়সী বোন প্রাপ্তি ঘোষকে তার বড় ভাই ইন্দ্রজিৎ একটি ডোবার পানিতে ফেলে হত্যা করেন। ওই রাতে ইন্দ্রজিৎ নিজেই বাড়িতে গিয়ে মা–বাবাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ছোট বোন প্রাপ্তি কোথায়, সেটা জিজ্ঞাসা করেন। সবাই শিশুটিকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। খবর পেয়ে ওই রাতেই পুলিশ বাড়িতে যায়। সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ ইন্দ্রজিৎকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ইন্দ্রজিৎ স্বীকার করেন, তিনি বোনকে ডোবায় ফেলে হত্যা করেছেন। ইন্দ্রজিৎ পুলিশকে জানান, পারিবারিক বিরোধের জেরে ওই দিন দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে ছোট বোনকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাইরে নিয়ে যান এবং উপজেলার বাস টার্মিনাল-সংলগ্ন একটি ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় পরের দিন ২৩ জানুয়ারি বাবা পরিতোষ চন্দ্র ঘোষ বাদী হয়ে ছেলে ইন্দ্রজিৎ ও ছেলের মামাশ্বশুর উপজেলার হাসড়া মাজালিয়া এলাকার আনন্দ মহন্তকে আসামি করে মামলা করেন। পরে আসামি আনন্দ মহন্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিন মাস পর ২৬ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) ছাইফুল ইসলাম।
দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত ইন্দ্রজিৎ ঘোষকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও মামলায় অন্য আসামি আনন্দ মহন্তকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি নির্মল কান্তি ভদ্র এবং আসামিপক্ষে ছিলেন জয়ন্ত কুমার দেব।