সাতক্ষীরা মেডিকেলের শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী অপরাজিতা আঁখির (২৬) মৃত্যুর পর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তুলে বিচারের দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করে সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটকে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী সামান্তা বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সাতক্ষীরা মেডিকেলের প্রসূতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর চিকিৎসক শংকর বিশ্বাসের ছেলে রাহুল বিশ্বাসের সঙ্গে অপরাজিতা আঁখির বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে তাঁর ওপর নির্যাতন করা হতো। নিজের মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ না করলে তাঁর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের হুমকি দিতেন রাহুল বিশ্বাস। নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে আঁখি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
কলেজের শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই। একই সঙ্গে প্রসূতি বিভাগের প্রধান শংকর বিশ্বাসকে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় আমরা ক্লাসে ফিরে যাবে না।’ মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা শংকর বিশ্বাসের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
জানতে চাইলে প্রসূতি বিভাগের প্রধান শংকর বিশ্বাস মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে রাহুল বিশ্বাস ঢাকায় থাকেন। লেখাপড়ার সুবিধার্থে তাঁর পুত্রবধূ বাবার বাড়ি নওয়াপাড়ায় থাকতেন। তাঁর সঙ্গে তাঁদের কোনো দূরত্ব ছিল না। তিনি বলেন, এফসিপিএস পরীক্ষায় ভালো করতে না পারায় কয়েক দিন ধরে মানসিক চাপে ছিল আঁখি। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যায়। শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আঁখি আত্মহত্যা করেননি। শিক্ষার্থীরা না বুঝে এসব করছেন।
প্রসঙ্গত, অপরাজিতা আঁখির বাবার বাড়ি যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়া ইউনিয়নের গুয়াখোলা গ্রামে। তিনি সেখানে থাকতেন। পরিবারের পক্ষ থেকে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার ভোরে তিনি মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সোহানা আজমীন স্বাক্ষরিত মৃত ঘোষণার সনদপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অপরাজিতা আঁখি তীব্র পেটের ব্যথাজনিত কারণে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।’