নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান, তাঁর শ্যালকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নারায়ণগঞ্জে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তাঁর চাচাতো শ্যালক এহসানুল হকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নসিব পরিবহন দখলে নেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাফিয়া শারমিনের আদালতে মামলাটি করেন নসিব পরিবহনের পরিচালক তোফাজ্জল হোসাইন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আবদুল রশিদ মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুনানি শেষে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এফআইআর হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের চাচাতো শ্যালক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক, হকার্স লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা মহসিন ভুঁইয়া, শামীম ওসমানের পরিবহন খাতের কোষাধ্যক্ষ দিদারুল আলম, রুবেল, মো. সুলতান, আইয়ুব আলী, মিলন, আজমেরী ওসমানের কর্মী নাসির উদ্দিন।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, তোফাজ্জাল হোসাইন, নসিব পরিবহনের চেয়ারম্যান আশরাফুল আউয়াল, অপর পরিচালক মো. আছলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল আমিন মির্জা যৌথভাবে ২০০৮ সালের ২২ আগস্ট নসিব পরিবহন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি চালু করেন। নসিব পরিবহন নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে শিমরাইল পর্যন্ত চলাচল করে। ২০১৪ সালে শামীম ওসমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর চাচাতো শ্যালক এহসানুল হকের নেতৃত্বে আসামিরা নসিব পরিবহনের কার্যালয়ে গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জন সন্ত্রাসী ওই কার্যালয় ভাঙচুর ও লুটপাট করে দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
মামলার আরজিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এই ঘটনার পর ওই বাদী ও সাক্ষীরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে যান। পরে বাদীসহ সাক্ষীরা বিষয়টি র্যাব-১১–এ জানান। এতে তাঁরা কিছুদিন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারলেও র্যাব-১১-এর তৎকালীন অধিনায়ক লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেলে শামীম ওসমানের নির্দেশে আসামিরা পুনরায় নসিব পরিবহন দখল করেন। উল্টো নসিব পরিবহনের চেয়ারম্যান ও মালিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ওই মামলায় আদালত থেকে খালাস পান তাঁরা।
শামীম ওসমানের নির্দেশে তাঁর শ্যালক এহসানুল হকের নেতৃত্বে আসামিরা আবার ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে আসামিরা নসিব পরিবহনের ১১টি গাড়ি তাঁদের দখলে নেন। গাড়ির রং ও নাম পরিবর্তন করে বন্ধু পরিবহন রাখা হয়। জেলা প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই বন্ধু পরিবহন শামীম ওসমানের নাম ব্যবহার করে ভয়ভীতির মাধ্যমে চালানো হচ্ছে। বিষয়টি তৎকালীন পুলিশ সুপার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।