বর্ডারের ওই পারে আমাদের কোনো প্রভু নেই, বন্ধু আছে: মির্জা আব্বাস
‘বাংলাদেশ সুন্দর একটা শান্তিপ্রিয় দেশ। দেশটার দিকে হায়েনার লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে। এই লোলুপ দৃষ্টি আমাদের বন্ধ করে দিতে হবে। আমাদের নেত্রী বলেছেন, “বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই।” আমরাও বলি, বর্ডারের ওই পারে আমাদের কোনো প্রভু নেই, বন্ধু আছে। আমরা প্রভুত্ববাদে বিশ্বাস করি না, বন্ধুত্বে বিশ্বাস করি।’
আজ সোমবার বিকেলে গাজীপুর শহরের রথখোলা মাঠে জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের চারদিকে অক্টোপাসের মতো বিদেশি শক্তি হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এদের থেকে বাঁচতে হবে। স্লোগান দিলে চলবে না। বুকের রক্ত যারা দেবে, তাদের জন্য স্লোগান দিতে হবে। পুলিশের ভয়ে তরুণেরা যদি আন্দোলন না করে, তাহলে এই দেশ থেকে গণতন্ত্র চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে। অনেক রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি, কারও দাসত্ব করার জন্য নয়। রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা রক্ত দিয়েই রক্ষা করতে হবে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তাঁর মুক্তি মানে এ দেশের মানুষের মুক্তি। এ দেশের মানুষের কথা বলার মুক্তি। বাকশালের পর জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এরপর খালেদা জিয়া এই দেশে প্রথম গণতন্ত্র দিয়েছেন। আজ লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, তাদের বিচার নেই। অথচ আমরা যাঁরা দেশপ্রেমী, দেশের গণতন্ত্রের কথা বলি, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। গ্রেপ্তার করা হয়। কী অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? কী অপরাধ ছিল? আসল কথা, আমাদের নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগ নেতারা ভয় পান।’
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনি বলেন, বিএনপি দাসত্বের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। আমরা দাসত্বের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চাই না। আপনারা দাসত্বের পথ দিয়ে ক্ষমতায় আছেন। এই যে কয়েক দিন আগে চুক্তি করে এলেন, এই চুক্তিতে আমাদের দেশের কোনো স্বার্থ হয়নি। বাংলাদেশের নদীতে পানি নেই। ৫৪টি নদীর মুখ বন্ধ করে রেখেছে। ফারাক্কা, তিস্তায় পানি নেই।’ ভারত সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইলে এ দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক করতে হবে, সরকারের সঙ্গে নয়।’
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহ্ রিয়াজুলের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম। বিশেষ বক্তা ছিলেন বিএনপির সহশ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মো. মজিবুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাজহারুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ওমর ফারুক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার।