খুলনার পথে বাসের পর এবার ট্রেনও বন্ধ, দুর্ভোগে ৫ জেলার মানুষ
বাস চলাচল বন্ধ হয়েছিল গতকাল। আজ সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে ট্রেন। এ কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও যশোরের মানুষ বিভাগীয় শহর খুলনায় যেতে পারছেন না। বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা থেকে আজ শনিবার সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত খুলনা অভিমুখে কোনো বাস-ট্রেন ছেড়ে যায়নি। স্বাভাবিক সময়ে অন্তত চারটি বাস, একটি মেইল ট্রেন ও একটি এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।
গতকাল থেকেই চুয়াডাঙ্গা–খুলনা রুটের বাসগুলো যশোর পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসছিল। তবে আজ সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ আছে। আজ সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে আন্তনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ও দুপুর ১২টা ৪ মিনিটে মেইল ট্রেন মহানন্দা এক্সপ্রেস চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে খুলনা অভিমুখে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা ২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও ট্রেনগুলো স্টেশনে আসেনি। সেগুলো আজকে আর আসবে না বলে স্টেশনের একটি সূত্র জানিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মিজানুর রহমান দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস পাবনার ঈশ্বরদী জংশনে অবস্থান করছে। সেটি কখন সেখান থেকে ছাড়বে বা আদৌ ছাড়বে কি না, তা বলতে পারেননি এই কর্মকর্তা। মহানন্দা এক্সপ্রেসের বিষয়েও কিছুই জানাতে পারেননি তিনি।
স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে খুলনায় মেয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে এসেছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত উচ্চমান সহকারী কাজী আসলাম হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টার দিকে স্টেশনমাস্টার তাঁকে বলেছিলেন, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী রেল জংশনে অবস্থান করছে। দুই ঘণ্টা পরও একই কথা শোনাচ্ছেন তিনি। এ জন্য দুপুর সোয়া ১২টার দিকে যাত্রা বাতিল করে বাড়ির পথ ধরেছেন তিনি।
পৌর এলাকার দিগড়ি গ্রামের ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক ও তাঁর স্ত্রীর যশোরে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে আসেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা পরও ট্রেন না আসায় বাড়ি ফিরে যান এই দম্পতি।
চুয়াডাঙ্গা জেলার বাসিন্দারা যাত্রা বাতিল করে বাড়িতে ফিরে গেলেও বাইরের জেলার মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পিরোলী গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, স্ত্রী ও নাতনিকে নিয়ে তিনি দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুরে এসেছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় বিপাকে পড়েছেন। হাবিবুর বলেন, ‘সকাল আটটা থেকে বসে আছি। দুপুর ১২টার সময়ও ট্রেনের খবর নেই। বাসও চলছে না। কি যে করি, বুঝে উঠতে পারছি না।’