টি-শার্ট ও জিনস পরা শাওন বিএনপির মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশ ও বিএনপির সংঘর্ষে গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী শাওন প্রধান (২০) ফতুল্লার এনায়েতনগর এলাকায় একটি কারখানায় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত শোভাযাত্রায় যোগ দিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় যুবদল নেতাদের সঙ্গে নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সংঘর্ষ শুরু হলে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। এরপর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শাওন প্রধানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়নের পূর্ব গোপালনগর এলাকায়। তাঁর মৃত্যুর পর আজ দুপুর থেকে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, ডোরাকাটা সাদা রঙের টি-শার্ট ও কালো জিনস পরিহিত শাওন মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন।
শহরের গুলশান সিনেমা হলের সামনে শাওন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন তাঁর লাশ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আসা যুবদলের দুজন কর্মী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁদের একজন বলেন, ‘ডিআইটি আলী আহাম্মদ চুনকানগর মিলনায়তনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে আমরা ২ নম্বর রেলগেটের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় সংঘর্ষ শুরু হলে আমরা গুলশান সিনেমা হলের সামনে অবস্থান নেই। সেখানেই একটি গুলি এসে শাওনের বুকের বাঁ পাশে লাগে। শাওন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অন্য নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। পরে তাঁকে আমরা হাসপাতালে নিয়ে আসি।’
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হাসান জানান, নিহত ব্যক্তির বুকের বাঁ পাশে একটি গুলির চিহ্ন আছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে ঘুরে দেখা যায়, শাওনের লাশ জরুরি বিভাগের সামনে একটি স্ট্রেচারে পড়ে আছে। গণমাধ্যমকর্মীরা লাশের ছবি তুলছিলেন। লাশ থেকে কিছুটা দূরে দুজন তরুণকে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। কাছে গিয়ে জানা গেল তাঁরা শাওনের বড় দুই ভাই।
শাওনের বড় ভাই ফরহাদ প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না৷ আজ সকালে স্থানীয় যুবদল নেতাদের ডাকে শাওন শহরে যান। তার কিছুক্ষণ পর তাঁরা জানতে পারেন, শাওন গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ সময় ফরহাদ প্রধানের মুঠোফোনে একটি কল আসে। ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মামাগো আমার নিরীহ ভাইটারে পুলিশ গুলি কইরা মাইরা ফালাইছে। ওর লাশটা একা হাসপাতালে পইড়া আছে। কেউ নাই ওর লগে। হাজার মানুষের লগে গুলি খাইলো মামা, সবাই ভাইরে রাইখা পলাইছে। আমার ভাই একা ডোমঘরে পইড়া আছে মামা।’