কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দিল ছাত্রলীগ

পিটুনি
প্রতীকী ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত থাকায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পিটিয়ে হল থেকে বের দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ওই শিক্ষার্থীর কক্ষে ঢুকে তাঁকে মারধর করা হয়।
হামলার শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম সামিউল আজিম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সামিউল আজিম শহীদ মশিয়ূর রহমান হলের ছাত্র।

খবর পেয়ে শহীদ মশিয়ূর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক তানভীর ইসলাম এই বিষয়ে খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, ‘এক শিক্ষার্থীকে মারধরের তথ্য পেয়ে আমি হলে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। হলের শিক্ষার্থীরা তাকে বলেছে, “সামিউল নিজেই হল থেকে বেরিয়ে গেছে।” তাকে মারধরের বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনে অংশ নিয়ে প্রতিদিন নানা কর্মসূচি পালন করছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম এবং সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান শিহাবের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৪২২ নম্বর কক্ষে যান। এ সময় তাঁরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত থাকায় এবং কর্মসূচিতে ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান দেওয়ায় সামিউল আজিমকে মারধর করে মালামালসহ হল থেকে বের করে দেন।

সামিউল আজিম সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল দুপুরে কর্মসূচি শেষে হলে ফিরে দেখি, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলের গেটে তালা ঝুলিয়ে স্লোগান দিচ্ছে। আমি বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই নিই। এরপর সন্ধ্যায় ছাত্রলীগে হৃদয়, শিহাব ও রাকিব আমার রুমে ঢুকে যায়। এরপর তারা সব দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়। তারা জিজ্ঞাসা করে, “এখানে কোটাবিরোধী আন্দোলন কারা করছে?” আমি উত্তর দিলে তারা বলে, “রাজাকার স্লোগান কেন দিয়েছিস?” এরপর তারা আমাকে খুব মারধর করে এবং পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেয়।’
সামিউল আজিম আরও বলেন, ‘এভাবে মেরে শিক্ষার্থীসমাজকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। আমরা আন্দোলন করছি, সেটা চালিয়ে যাব।’

সামিউল আজিম জানান, মারপিট ও হল থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হলের প্রাধ্যক্ষকে জানাবেন।

কোটা সংস্কারের আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় সামিউল আজিমকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম হৃদয়ের মুঠোফোনে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সল বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’