২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম ব্যর্থ, নেতৃত্ব তরুণ প্রজন্মকেই নিতে হবে: হাসনাত আবদুল্লাহ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। বুধবার দুপুরে কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে
ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব তরুণ প্রজন্মকেই নিতে হবে। ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত যে আমাদের পূর্ববর্তী যে প্রজন্ম, তারা ব্যর্থ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং আমাদের কাঁধ শক্ত করতে হবে, আমরা যেন তাদের দায়িত্ব নিতে পারি। আমরা তাদের দায়িত্ব নিয়ে আমরা একই সঙ্গে আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশটা যেন গড়তে পারি।’

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন হাসনাত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমও এই সফরে অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি, মোকাদ্দেসুর রহমানসহ সংগঠনের আরও অনেকে তাঁদের সঙ্গে আছেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমাদের মানসিকভাবে একটা প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা একটা জেনারেশন কনফ্লিক্টের (প্রজন্মের দ্বন্দ্ব) দিকে যাচ্ছি। এই জেনারেশন কনফ্লিক্টের বিষয়টা যদি আমরা প্রশমন করতে চাই, কমিয়ে নিয়ে আসতে চাই, তাহলে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নাও, আমাদের নেতৃত্বের জায়গায় যেতে হবে।’

নিজ জেলা পঞ্চগড় সফরে এসে সারজিস আলম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমাদের দলকানা হওয়া যাবে না, সে যে দলই হোক না কেন। কেউ যদি আপনার কথা শোনে, আপনার কথা বলে, আপনার জন্য কাজ করে এবং আপনার কাছে জবাবদিহি করতে প্রস্তুত থাকে, সে যে–ই হোক না কেন, আপনি আপনার প্রতিনিধি হিসেবে তাকেই বেছে নেবেন। দলকানা হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা ইয়াং জেনারেশন যদি এই জায়গায় সচেতন না হই, তাহলে আর কারা হবে।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সারজিস আরও বলেন, ‘শত শত মানুষ আছে, বুলেট বুকের এক পাশ দিয়ে ঢুকে আরেক পাশ দিয়ে বের হয়েছে। হাসপাতালে অনেকের হাত কেটে ফেলেছে, পা কেটে ফেলেছে। কারও মাথার খুলি উড়ে গেছে, মগজ বের হয়ে গেছে, চোখটা বের হয়ে ছিল।’ এ সময় নিজের স্মার্টফোনে হিমেল নামের এক তরুণের ছবি দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘ওর মুখে সাড়ে ৩০০ বুলেট মারা হয়েছে; ছোট বুলেট যেগুলোকে পিলেট বলে। সে আন্দোলনে সামনে ছিল। এ ছাড়া তিন বছরের ছেলে-মেয়েকে মারা হয়েছে গুলি করে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিল মিছিল যাচ্ছে। তাদেরও নির্বিচার গুলি করা হয়েছে। কয়েক মাসের একটা বাচ্চা কোলে ছিল, তাকেও গুলি করে মারা হয়েছে।’

সারজিস আলম বলেন, ‘দেশে যে এত বড় একটা গণহত্যা চালানো হয়েছে, এটা যে কারণে হয়েছে, এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। যারা ক্ষমতাপিপাসু, যাদের কাছে জীবনের চেয়ে ক্ষমতার মূল্য বেশি, টাকার মূল্য বেশি, তাদের আমাদের এখন থেকে পরিত্যাগ করতে হবে।’

এ সময় কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ইমদাদুল হকসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।