কুমিল্লায় বগি লাইনচ্যুতির ১৬ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ওই পথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আজ সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মং গু মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। তবে হাসানপুরের তেজের বাজার এলাকায় ডাউন লাইন দিয়ে (চট্টগ্রামমুখী এক লাইনে) ট্রেন চলাচল করছে।
এর আগে দুর্ঘটনার চার ঘণ্টা পর গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে। এরপর চট্টগ্রাম থেকে অন্য ট্রেনগুলোও পর্যায়ক্রমে ছেড়ে আসে। যদিও ট্রেনগুলোকে ফেনী স্টেশনে এসে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোকে ফেনী স্টেশনে অপেক্ষমাণ রাখা হয়। পরে ভোরে নাঙ্গলকোটের লাইন সচল হলে ট্রেনগুলো সেখান থেকে ছেড়ে যায়।
গতকাল রোববার বেলা ১টা ৪৩ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি কুমিল্লার হাসানপুর স্টেশনের কাছে তেজের বাজারে লাইনচ্যুত হয়। এতে রেললাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপ লাইনের অর্থাৎ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী লাইনের স্লিপার, নাট–বল্টু নষ্ট হয়ে অন্তত আধা কিলোমিটার রেলপথ নষ্ট হয়ে যায়। এগুলোর মেরামতকাজ এখনো শুরু হয়নি। তবে যাত্রীদের দীর্ঘ ভোগান্তির পর ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
আজ সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় বাসিন্দা নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আপ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এটির স্লিপার লাইনের আশপাশে পড়ে আছে। কিছু অংশে রেললাইনের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। এলাকাবাসী বলছেন, নিম্নমানের স্লিপার দেওয়া, নাট–বল্টু ঠিক না থাকার কারণে ত্রুটি ছিল লাইনে। এ কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। একই এলাকায় গত বছরের ১৬ এপ্রিল মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সোনার বাংলা ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। ওই দুর্ঘটনাতেও বগি লাইনচ্যুত হয়। আহত হন অনেকে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম প্রথম আলোকে বলেন, ডাবল লাইন হয়েছে। এগুলো ঠিক আছে কি না দেখতে হবে। গলদ বের করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। রেললাইনে ত্রুটি থেকে দুর্ঘটনা হয়েছে বলে বলাবলি হচ্ছে। এত টাকা খরচ করে লাইন করল। মানসম্মত যন্ত্রপাতি, স্লিপার দিল কি না, সেটাও তদন্ত কমিটিকে দেখতে হবে।