টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় সাদপন্থী আরেক মুসল্লি গ্রেপ্তার
টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় করা মামলায় মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারী আরেক মুসল্লিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার দাইয়াপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেপ্তার মুসল্লির নাম জিয়া বিন কাশেম। তাঁর বাসা ঢাকার সাভারে। তিনি ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলার ছয় নম্বর আসামি। মামলার পর থেকে ডবলমুরিংয়ের দাইয়াপাড়ায় তাঁর এক সাথি ভাইয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর আগে ১৯ ডিসেম্বর রাতে একই মামলায় ঢাকার খিলক্ষেত থেকে মোয়াজ বিন নূর নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (টঙ্গী জোন) এন এম নাসিরুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার পর থেকেই পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের ডবলমুরিংয়ে আত্মগোপনে থাকা এজাহারভুক্ত আসামি জিয়া বিন কাশেমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরে আনা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে আদালতে তোলা হবে।
এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ বলেন, ‘আমরা শুক্রবার রাত তিনটার পর অভিযান চালিয়ে দাইয়াপাড়ায় তাবলিগের এক সাথি ভাইয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করি। মামলার পর থেকেই এখানে আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানতে পেরেছি।’
ইজতেমা মাঠে হামলা ও হতাহতের ঘটনায় গত ১৯ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে সাদের অনুসারী ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েক শ মানুষকে আসামি করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী এস এম আলম নামের এক ব্যক্তি। আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন সাদ অনুসারীদের প্রধান মুরব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, তাঁর ছেলে ওসামা ইসলাম আনু, আবদুল্লাহ মনসুর, কাজী এরতেজা হাসান, মোয়াজ বিন নূর, জিয়া বিন কাশেম, আজিমুদ্দিন, আনোয়ার আবদুল্লাহ, শফিউল্লাহ প্রমুখ। আসামিরা সবাই সাদ অনুসারীদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বলা হয়েছে, আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে তিন দিনের মূল ইজতেমা শুরু হবে। এ উপলক্ষে মাঠ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইজতেমা মাঠে অবস্থান করছিলেন তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা। এর মধ্যে আসামিরা বর্তমান সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে অনুমতি ব্যতীত ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনের জোড় করতে চান। এ নিয়ে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উসকানি ছড়াচ্ছিলেন। মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম তাঁর স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে সারা দেশের সাদ অনুসারীদের ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা মাঠেই জোড় পালনের ঘোষণা দেন। এ উপলক্ষে হাজারো সাদ অনুসারী মুসল্লি ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর ইজতেমা মাঠের চারপাশে জড়ো হন। ওয়াসিফুল ইসলামের হুকুমে সেদিন (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে হাজারো সাদ অনুসারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইজতেমা মাঠে ঘুমন্ত সাধারণ মুসল্লিদের (জোবায়েরপন্থী) ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তিনজন নিহত হন।