ঈশ্বরগঞ্জে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ছাত্রী ও তার মা-বাবাকে মারধরের অভিযোগ

অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাঁর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন ছাত্রীটির প্রতিবেশিরাছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ছাত্রী ও তার মা-বাবাকে কয়েক দফা মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সাব্বির মিয়া (২৩) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার ও গত বৃহস্পতিবার উপজেলার রাজীবপুর ইউনিয়নের শাহগঞ্জ বাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটেছে।

অভিযুক্ত সাব্বির মিয়ার উপজেলার মাইজহাটি গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে। সাব্বির মিয়া পেশায় পিকআপচালক।

আজ শনিবার দুপুরে ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আহত ওই ছাত্রী বিশ্রাম নিচ্ছে। ছাত্রী জানায়, সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে পেশায় পিকআপচালক মো. সাব্বির মিয়া তাকে পথে–ঘাটে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। দিন দিন উত্ত্যক্তের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এ ঘটনাটি সে মা-বাবাকে জানায়। তাঁর মা-বাবা উত্ত্যক্তের ঘটনার বিচার চায় সাব্বিরের পরিবারের কাছে। এ কারণে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয় সাব্বির মিয়া।

ওই ছাত্রী জানায়, সে সাব্বিরের পরিবারের কাছ থেকে কোনো বিচার পায়নি। উল্টো বিচার চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাব্বির তাকে ও তার মাকে গত বৃহস্পতিবার এক দফা মারধর করেন। তার চুলের মুঠি ধরে ও পরনের ওড়না গলায় পেঁচিয়ে টানাহেঁচড়া করা হয়। এতে গুরুতর আহত হলে তাঁর বাবা তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান।

ওই ছাত্রী আরও জানায়, গতকাল শুক্রবার তার বাবার দোকানে গিয়ে মারধর করেছেন সাব্বির। খবর পেয়ে বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে আরেক দফা মারধরের শিকার হয় সে ও তার মা। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে সাব্বিরের মাকে ধরে নিয়ে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার পর সেনাবাহিনীকে ফোন করা হলে তারা গ্রামে এলে সাব্বির ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

আজ মাইজহাটি গ্রামে সাব্বিরের বাড়িতে গিয়ে ঘরগুলো তালাবদ্ধ দেখা যায়। এদিকে ছাত্রীর পরিবারের নিরাপত্তার জন্য গতকাল শুক্রবার বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছিল।

ছাত্রীর প্রতিবেশীরা জানান, বখাটে সাব্বিরের কারণে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে থাকেন গ্রামের অনেক মা-বাবা। ছাত্রী ও তাঁর পরিবারকে মারধরের ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা সাব্বিরসহ অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাঁর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত সাব্বিরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।