যশোরে চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা চায়ের দোকান থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। রাতে উপজেলার নওয়াপাড়া বুড়িরঘাট এলাকায় আয়কর অফিসের পেছনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে ফেলে রেখে যায়। এলাকার লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতার নাম জিয়াউদ্দিন পলাশ (৪৫)। তিনি উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন সরদারের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ওই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ছিলেন।
এ ঘটনায় এলাকার লোকজন রইচ সিকদার (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রইচ সিকদার উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের সিদ্দিক সরদারের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি নওয়াপাড়া পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জিয়াউদ্দিন পলাশ নওয়াপাড়া গ্রামের তেঁতুলতলা মসজিদের পাশে একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় রইচ সিকদারের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন চায়ের দোকান থেকে জিয়াউদ্দিন পলাশকে ধরে নিয়ে যান। তাঁরা তাঁকে নওয়াপাড়া বুড়িরঘাট এলাকায় আয়কর অফিসের পেছনে ভৈরব নদের তীরে বালুর স্তূপের ওপর নিয়ে যান। সেখানে তাঁরা তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ফেলে রেখে যান। এলাকার লোকজন তাঁকে খুঁজে পেয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করে রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শোভন বিশ্বাস বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগে জিয়াউদ্দিন পলাশের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর দুই পায়ের হাঁটুর নিচে ধারালো অস্ত্রের একাধিক কোপের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া তাঁর দুই হাতের কবজিতে ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর পিঠে কয়েকটি লাঠির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন রইচ সিকদারকে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে গতকাল রাতেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমাদুল করিম বলেন, জিয়াউদ্দিন পলাশকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত একজনকে ধরা হয়েছে। অন্যদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
ওসি এমাদুল করিম আরও বলেন, কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।