চুয়াডাঙ্গা-১
রিটার্নিং কর্মকর্তার সভায় নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বললেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার
চুয়াডাঙ্গা-১ (আলমডাঙ্গা-সদর একাংশ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আচরণবিধি–সম্পর্কিত একটি মতবিনিময় সভায় তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীদের বিরুদ্ধে তিনি ঈগল প্রতীকের পোস্টার ছেঁড়া ও হামলার অভিযোগ করেন।
সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমার উদ্দেশে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘আমি নিজে খুবই শঙ্কিত। দেহরক্ষী থাকলেও ২১ তারিখের পর অস্ত্র বহন করতে পারছি না। যেকোনো সময় আমি হামলার সম্মুখীন হতে পারি। ২৩ ডিসেম্বর রাতে ভাণ্ডারদহের ঘটনায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় বড় ধরনের অঘটন ঘটেনি। অন্যান্য জেলায় প্রার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, এখানেও বিবেচনা করার অনুরোধ করছি।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন তিনি। গত শনিবার রাতে সদর উপজেলার ভাণ্ডারদহে প্রচারণার সময় দিলীপ কুমারকে অপহরণচেষ্টা, কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও পথরোধ করে প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নৌকার কর্মী–সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় মামলার পর পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সভায় দিলীপ কুমার অভিযোগ করেন, ঈগলের পোস্টার-ব্যানার ছেঁড়া হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে হুমকি দিচ্ছে। বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অনেক জায়গায় পোস্টার লাগাতে দেওয়া হচ্ছে না। এসব ঘটনায় জিডি, অভিযোগ ও মামলা করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসন এসব ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি আশা করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, ‘প্রার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অত্যুৎসাহী হয়ে অনেক কর্মী কিছু বলে ফেলেন বা করে ফেলেন। এমন যাতে না হয়। তাঁরা সব অভিযোগ যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে একটু হাই-হ্যালো করলে সম্পর্কের উন্নয়ন হবে। তখন শঙ্কা থাকবে না। নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব নির্দেশনা দিয়েছে, তা আমার, আপনার সবার জন্য প্রযোজ্য। শুধু জানলেই হবে না, মানতেও হবে।’
আওয়ামী লীগ নেতার জামিন
অপহরণচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী আহাম্মেদ হাসানুজ্জামানকে জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ দুপুরে সদর আমলি আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লস্কর সোহেল রানা তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। বিকেলে কারামুক্ত হয়ে তিনি প্রথমে দলীয় কার্যালয়ে ও পরে বাড়িতে যান। তিনি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ওরফে ছেলুনের অন্যতম কর্মী।
স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে অপহরণচেষ্টার অভিযোগে ঈগল প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. আবদুল মালেক বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ১০০ থেকে ১২০ জনকে। মামলার পর পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা আলী আহাম্মেদ হাসানুজ্জামানসহ নৌকা প্রতীকের পাঁচ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। আদালত ওই দিন চারজনকে জামিন দিলেও আলী আহাম্মেদ হাসানুজ্জামানকে কারাগারে পাঠান। এর পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন। আজ নতুন করে জামিনের আবেদন করলে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
২৪ ডিসেম্বর দুপুরে নৌকা প্রতীকের কর্মী সদর উপজেলার ভাণ্ডারদহের হাশেম আলী বাদী হয়ে অভিন্ন অভিযোগে ঈগল প্রতীকের কর্মী পদ্মবিলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাসসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় পাল্টা মামলা করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার ভাষ্যমতে, তাঁর পক্ষে করা মামলার সাক্ষীদেরই পাল্টা মামলায় আসামি করা হয়েছে।