নোয়াখালীতে বিদ্যুতের দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপকেন্দ্র ঘেরাও, ইটপাটকেল নিক্ষেপ

নোয়াখালীতে বিদ্যুতের দাবিতে হামলা-ভাঙচুরের শিকার নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের আইচের টেকে পল্লীবিদ্যুত সমিতির উপকেন্দ্র। গতকাল রাতে তোলাছবি: প্রথম আলো।

নোয়াখালীর সেনবাগে বিদ্যুতের দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একটি উপকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা। গতকাল মঙ্গলবার রাত আনুমানিক আটটার দিকে উপজেলার নবীপুর আইচেরটেক এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে উপকেন্দ্রের ভেতরের একটি ভবনের জানালার দুটি কাচ ভেঙে যায়। তবে উপকেন্দ্রের দায়িত্বরত কোনো কর্মচারী হামলায় হতাহত হননি।

স্থানীয় লোকজনের ভাগ্য অনুযায়ী, কয়েক দিন ধরে সেনবাগ উপজেলার লোডশেডিং অনেক বেড়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৪-১৫ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ থাকে না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের গ্রাহকেরা। ক্ষুদ্র গ্রাহকেরা মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নবীপুর ইউনিয়নের আইচেরটেক এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের উপকেন্দ্র ঘেরাও করেন। তাঁরা এ সময় বিদ্যুতের দাবিতে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় সেখানে হাজারখানেক লোকের সমাগম হয়। ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের কয়েকজন এ সময় উপকেন্দ্রের ভেতরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। ইটের আঘাতে জানালার দুটি কাচ ভেঙে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে খবর পেয়ে নবীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সেনবাগ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলেন। তখন উপমহাব্যবস্থাপক মুঠোফোনে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যুতের পরিস্থিতি উন্নতির আশ্বাস দেন। এতে গ্রাহকেরা কিছুটা শান্ত হন। পরে চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন গ্রাহকদের বুঝিয়ে যার যার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরে পল্লী বিদ্যুতের তীব্র লোডশেডিং চলছে। বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। এতে গ্রাহকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। যার জেরে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাহক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিদ্যুতের উপকেন্দ্র ঘেরাও করেন। তিনি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং গ্রাহকদের বুঝিয়ে শান্ত করেন।

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সেনবাগ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মিনারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুই দিন ধরে বিদ্যুতের লোডশেডিং কিছুটা বেশি। ২৪ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে তিনি সরবরাহ পাচ্ছেন ১২ থেকে ১৪ মেগাওয়াট। এতে গ্রাহকদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ বিরাজ করছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে কয়েক শ গ্রাহক নবীপুর এলাকার উপকেন্দ্রের সামনে জড়ো হন। তাঁরা এ সময় সেখানে বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ সময় উপকেন্দ্র লক্ষ্য করে কয়েকটি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে জানালার দুটি কাচ ভেঙে গেছে। পরে তিনি ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মুঠোফোনে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের শান্ত করেন।