বইমেলার কারণে কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে দেরিতে
শনিবার কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মঞ্চ তৈরির কাজই শুরু হয়নি। মঞ্চের জন্য সব ধরনের মালামাল কুমিল্লা টাউন হল মাঠে স্তূপ করে রাখা আছে। শুক্রবার বিকেলের মধ্যে মঞ্চ প্রস্তুত হবে বলে দলীয় নেতারা জানিয়েছেন।
গণসমাবেশ ঘিরে কুমিল্লায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। পুরো নগরে মাইকিং করা হচ্ছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে লাগানো হয়েছে নগরের সড়কগুলো লাগোয়া বিভিন্ন স্থাপনায়। এই গণসমাবেশে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা, কুমিল্লা উত্তর জেলা, কুমিল্লা মহানগর, চাঁদপুর জেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে পাঁচ লাখ লোক জড়ো করতে চায় বিএনপি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশের সমন্বয়কারী মোস্তাক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসন টাউন হল মাঠে গত শনিবার থেকে আজ রাত আটটা পর্যন্ত ৬ দিনব্যাপী বইমেলা চলে। এ কারণে মঞ্চ তৈরি করা যায়নি। আজ রাত থেকে মঞ্চ তৈরি শুরু হবে। শেষ হবে শুক্রবার বিকেলের মধ্যে।
এই গণসমাবেশে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা, কুমিল্লা উত্তর জেলা, কুমিল্লা মহানগর, চাঁদপুর জেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে পাঁচ লাখ লোক জড়ো করতে চায় বিএনপি।
আজ সন্ধ্যায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের পশ্চিম-উত্তর কোণে মঞ্চ করার জন্য কাঠের গুঁড়ি, রড, বাঁশ রাখা আছে। কিছু কাঠ-বাঁশ মঞ্চ করার জন্য কাটা হচ্ছে। এই সময় মঞ্চ পরিদর্শন করতে আসেন কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশের দলীয় প্রধান (টিম লিডার) বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন ও কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া। তাঁরা পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন। ৭০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের মঞ্চ করা হবে। মঞ্চে পাঁচ জেলার জ্যেষ্ঠ নেতা ও কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন। অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো কুমিল্লাতেও খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য চেয়ার রাখা থাকবে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, বিএনপির গণসমাবেশের তারিখ বহু আগেই ঘোষণা করা হয়। টাউন হলের বরাদ্দও চাওয়া হয় অনেক আগে। কিন্তু প্রশাসন বইমেলা দেওয়ায় যথাসময়ে মঞ্চের কাজ শুরু করা যায়নি। তার ওপর বৈদ্যুতিক সমস্যার কারণেও মঞ্চ তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশের সমন্বয়কারী মোস্তাক মিয়া বলেন, ‘চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও কুমিল্লায় বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গণসমাবেশের প্রচারণা চালাতে গেলে দলীয় কর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোথাও কোথাও পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দিচ্ছেন। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। শর্ত দিয়ে আসলে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি হবে যুক্তিশীল।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে কুমিল্লায় বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বক্তব্য দেবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাসসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সভা সঞ্চালনা করবেন কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. জসিম উদ্দিন।
এদিকে কাল শুক্রবার জুমার নামাজ হবে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে। দলীয় নেতা-কর্মীরা টাউন হল মাঠে থাকবেন, খাবার খাবেন এবং নামাজ পড়বেন।