মিয়ানমারে সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়িতে আশ্রয় নেওয়া ২৮৭ জনকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে ২৬১ জনই মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্য। বাকিদের মধ্যে ২৩ জন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্য এবং ৩ জন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা। গত ৩ মার্চ থেকে কয়েক ধাপে এসব মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ওই ২৮৭ জনকে ফেরত পাঠানো হবে। মিয়ানমারের কারাগারে সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে মুক্তি পাওয়া ১৭৩ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে আজ বুধবার দুপুরে জাহাজটি কক্সবাজারে এসেছে।
মিয়ানমারের ২৮৭ জনকে আগামীকাল ভোরে ১১টি বাসে করে প্রথমে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে নেওয়া হবে। এর পর সেখান থেকে সকাল নয়টায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজে। দুপুরে জাহাজটি সেন্ট মার্টিন উপকূল হয়ে মিয়ানমারের সিটওয়েতে ফিরে যাবে জাহাজটি।
পুলিশ জানায়, আজ দুপুরে মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজটিতে করে দেশটির উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলও কক্সবাজারে আসে। জাহাজ থেকে নামার পর তাদের সড়কপথে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বিদ্যালয়েই বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৭ নাগরিক রয়েছেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেন। এ সময় বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার, নাইক্ষ্যংছড়ির জোন কমান্ডারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারের নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁরা কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
এর আগে সংঘাতের মধ্যে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া আরও ৩৩০ জনকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি জাহাজে করে দেশটিতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে। তবে গত রোববার ভোর থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত দুই পক্ষের সংঘাত বন্ধ রয়েছে বলে সীমান্তের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।