জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের অংশগ্রহণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যতিক্রমী আয়োজন
জুলাই বিপ্লবে স্বৈরশাসনের পতন এবং শহীদদের স্মরণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে মর্যাদাপূর্ণ ‘মিশু মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট, সিজন ৮’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ ব্যতিক্রমী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ইভেন্টের বিশেষ আকর্ষণ ছিল নারীদের একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, যা প্রচলিত ধ্যানধারণাকে ভেঙে দিয়েছে বলে দাবি আয়োজকদের।
টুর্নামেন্টের আয়োজকেরা বলেন, রোববারের খেলায় বিভাগের চারটি ব্যাচের নারী শিক্ষার্থীরা দুটি দল করে মাঠে নামেন। বিভাগের ৪৯তম ব্যাচ এবং ৫১ ব্যাচের ছাত্রীরা মিলে ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফেবুলাস’ নামে দল গঠন করে। আর ৫০তম ব্যাচ এবং ৫২তম ব্যাচের ছাত্রীরা মিলে কুইনডম নামে দল গঠন করে মাঠে নামেন। এতে কুইনডম দল একটি গোল করে জয়ী হয়েছে। ‘কুইনডম’ ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী জান্নাতির একমাত্র গোলে তাঁর দল বিজয়ী হয়।
আয়োজকেরা জানান, এই ম্যাচের উদ্দেশ্য ছিল নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের উৎসাহ বৃদ্ধি করা এবং তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। প্রশাসন বা সরকারের কাছ থেকে নারীদের খেলাধুলায় অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য উৎসাহের অভাব রয়েছে, যদিও নারী ক্রীড়াবিদদের যোগ্যতা ও প্রতিভা প্রমাণিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ফিফা রেফারি হিসেবে জয়া চাকমার নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে আয়োজকেরা উল্লেখ করেন।
আয়োজকদের মতে, ‘এই ইভেন্টের প্রধান লক্ষ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্যাম্পাসে নারীদের ফুটবলে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা। ভবিষ্যতে আমরা আরও নারীদের ফুটবল ইভেন্ট আয়োজনের প্রত্যাশা করছি।’
নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী অন্নেষা চক্রবর্তী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এটাই প্রথমবারের মতো নারীদের ফুটবল ম্যাচ এবং সেটা আমাদের বিভাগের উদ্যোগে! আমাদের দল জিতেছে, তা–ও আবার আমাদের এক বন্ধুর করা গোলে—এটা সত্যিই আনন্দের। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে অন্যান্য বিভাগ নিয়েও আরও টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারব।’
বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগের ক্রীড়া শিক্ষক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এটাই প্রথম নারীদের ফুটবল ম্যাচ। আমাদের অনেক প্রতিশ্রুতিশীল নারী খেলোয়াড় রয়েছে। যদি আমরা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারি, যেখানে নারীরা ফুটবল খেলতে উৎসাহিত হয়, তারা অবশ্যই ভালো করবে।’