কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাল-পরশু ক্লাস বর্জনের ঘোষণা শিক্ষক সমিতির
সাত দফা দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাল বুধবার ও পরশু বৃহস্পতিবার ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। তবে এ সময়ে যেসব বিভাগে চূড়ান্ত পরীক্ষা আছে, তা বহাল থাকবে। এ ছাড়া দাবি বাস্তবায়নে ১৮ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষকেরা। এর মধ্যে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ না নিলে ১৯ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষকেরা ক্লাসে যাবেন না।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষক সমিতির এক সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া ৬ মার্চ শিক্ষকদের সম্পর্কে উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের বিরূপ মন্তব্য করায় সভায় নিন্দা জ্ঞাপন করা হয় এবং উপাচার্যকে বক্তব্য প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়। সন্ধ্যায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাছান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শিক্ষকদের ৭ দফা দাবি হলো ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করে ঘটনার তদন্ত করা এবং হামলায় মদদ দেওয়া প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে অপসারণ করা; ঢাকার অতিথিশালা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা; অধ্যাপক গ্রেড ১ ও ২-তে আবেদন করা শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা; কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগ এবং ইতিমধ্যে বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের প্রত্যাহার করা; শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি স্থায়ীকরণে আইনবর্হিভূত শর্তারোপ করে জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্নের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা; ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় বিতর্কিত শিক্ষাছুটি নীতিমালা প্রত্যাহার করে আগের নীতিমালা বহাল এবং ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে সাধারণ সভা করেন নেতারা। সভায় এসব দাবি ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানতে চাইলে প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘কী কারণে প্রক্টরের অপসারণ চাওয়া হয়, তা বোধগম্য নয়।’ উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘আমি কোনো অনিয়ম করি না। নিয়মের মধ্য দিয়ে ভার্সিটি চালাই।’
প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে ক্রমেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। শিক্ষকদের দাবি ১৮ মার্চের মধ্যে বাস্তবায়নের উদ্যোগ না নিলে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস হচ্ছে না। এরপর রোজা ও ঈদুল ফিতরে ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি শুরু হবে। সেই হিসাবে শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১৮ মার্চ ছাড়া ঈদুল ফিতরের আগে আর ক্লাস হচ্ছে না। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।