ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়কের চেউয়াখালী কাঠের সেতুটি ভেসে গেছে। এতে দ্বীপের ১৫ হাজারের বেশি বাসিন্দা যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। গত রোববার দুপুরে জোয়ারের সময় সেতুটি ভেসে যায়।
এর আগে ২০২১ সালের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নিঝুম দ্বীপের চেউয়াখালী পাকা কালভার্টটি ভেসে যায়। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে কালভার্টের স্থানে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। ওই সেতুই ছিল দ্বীপে বাসিন্দাদের যাতায়াতের মাধ্যম।
নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেউয়াখালী বাজারসংলগ্ন কাঠের সেতুটি ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থল। তিন বছর আগে সেতুটি জোয়ারের পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হলেও সেটি পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে সেখানে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হলেও প্রায় সময় সেতু পার হতে গিয়ে নানা দুর্ঘটনা ঘটে। নিঝুম দ্বীপে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা কাঠের সেতু পার হতে গিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় পড়েন।
জসিম উদ্দিন জানান, সেতুটি ব্যবহার করেন নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা। রোববার দুপুরে অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে ভেঙে যায় কাঠের সেতুটি। ফলে সেটি ভেসে যাওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন এলাকার মানুষ। দুই দিন ধরে দ্বীপের বাসিন্দারা নৌকায় খালটি পার হচ্ছেন।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নিঝুম দ্বীপে বেড়িবাঁধ নেই। ফলে জোয়ারের পানি ঢুকে রাস্তাঘাটের ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে। রোববার প্রথম দিনের জোয়ারের পানির তোড়ে দ্বীপের প্রধান সড়কের চেউয়াখালী এলাকার একটি কাঠের সেতু ভেসে গেছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) হাতিয়া উপজেলার প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে নিঝুম দ্বীপের পাকা সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর নতুন সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। কিন্তু জোয়ারের ফলে খালের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে নকশা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, অল্প সময়ের মধ্যে সেতুটি স্থায়ীভাবে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশীষ চাকমা আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, নিঝুম দ্বীপের কাঠের সেতুটি রোববারের জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আপাতত ওই সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ। ঝড়–পরবর্তী দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিশেষ করে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এখনই সেতুটি পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অস্থায়ীভাবে সেতুটি নির্মাণ করে দেওয়া হবে।