রাজবাড়ীতে স্বাভাবিক প্রসবে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম
রাজবাড়ীর পাংশায় ছকিনা বেগম (৪০) নামের এক নারী একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে পাংশা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার ছাড়াই স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে ওই তিন শিশু ভূমিষ্ঠ হয়। ছকিনা বেগম জেলার কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণাডাঙ্গি গ্রামের কৃষক বিল্লাল খানের স্ত্রী।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নবজাতক তিনটি ছেলে। তিন শিশু ও মা সখিনা বেগম ভালো আছেন।
পাংশা আধুনিক ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের বেসরকারি ওই হাসপাতালে দেখা যায়, দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের মাঝের দিকে বেডে পাশাপাশি তিন নবজাতককে শুইয়ে রাখা হয়েছে। পাশের আরেক বেডে মা সখিনা বেগম আছেন। দেখভাল করছেন স্বামী বিল্লাল খান ও সখিনার ছোট বোন সালমা বেগম।
সখিনা বেগমের স্বামী বিল্লাল খান জানান, তাঁর দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রী সখিনা বেগমের আগে বিয়ে হয়েছিল। সখিনার আগের পক্ষের দুই ছেলে ও এক মেয়েসন্তান রয়েছে। এখন দ্বিতীয় স্ত্রী সখিনার ঘরে তাঁর তিন সন্তানের জন্ম হলো।
বিল্লাল খান জানান, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী প্রায় এক মাস আগে পাংশার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের ধানচন্দ্রপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে আসেন। সোমবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে তাঁর স্ত্রীর প্রসবব্যথা উঠলে দ্রুত পাংশা আধুনিক ক্লিনিকে ভর্তি করেন। রাত ১১টার দিকে কোনো প্রকার অস্ত্রোপচার ছাড়াই তিনটি ছেলেসন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। তিনি খুবই আনন্দিত এবং পরিবারের অন্য সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনেরাও খুশি।
তবে বিল্লাল খান বলেন, সামান্য কৃষিকাজ করে সংসার চালাতে হয়। এরপর ঘরে রয়েছে দুই স্ত্রী। আগের সন্তানদের পাশাপাশি নতুন তিন শিশুসন্তান নিয়ে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন। প্রয়োজনীয় খাবারসহ চিকিৎসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। সোমবার রাতে ভর্তির পর থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিল্লাল বলেন, ‘যদি কোনো বিত্তবান ব্যক্তি আমার এই বিপদে পাশে দাঁড়ান, তাহলে অনেক কৃতজ্ঞ থাকব।’ বিল্লাল সবার কাছে নবজাতক তিন সন্তান ও তাদের মায়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
পাংশা আধুনিক ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গাইনি বিশেষজ্ঞ আকতিনা হানি সুমনা বলেন, ‘সোমবার রাতে সখিনা নামের ওই নারীকে ভর্তির পর তাঁর স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা সিজার করাতে চাপ দিতে থাকেন। তখন আমার স্বামী গোপালগঞ্জ শেখ সায়রা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) কে এম আবু জালাল ও আমি প্রাথমিক পরীক্ষা করে দেখতে পাই, নরমাল ডেলিভারি সম্ভব। সবার চাপ উপেক্ষা করে রাত ১১টার দিকে ৩ নবজাতক স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ হয়। কোনো অস্ত্রোপচার ছাড়া নরমাল ডেলিভারি করাতে পেরে অনেক খুশি। তিন নবজাতক ও তাদের মা সুস্থ আছেন।’