খুলনায় মাদক বিক্রির প্রতিবাদকারী কলেজছাত্রকে হত্যার দায়ে ২১ জনের যাবজ্জীবন
খুলনার খালিশপুরের হাজী মুহাম্মদ মুহসিন কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমানকে হত্যার অপরাধে ২১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ৫ জন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩–এর বিচারক আব্দুস ছালাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। চার বছর দুই মাস পর মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার দেওয়া অভিযোগপত্রে ২৭ জনের নাম ছিল। এর মধ্যে একজন শিশু থাকায় আদালত আগেই তাকে খালাস দিয়েছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সৈকত, মো. মেহেদী হাসান, রওশন আনিজি, মো. সাজ্জাত হোসেন, ইমদাদুল ইসলাম, মো. আরিফ, মো. মুন্না, রফিকুল হাসান, মো. সাইফুল, মো. মোস্তাক আহমেদ, মিঠাই হৃদয়, মো. ফাহিম, রুবেল, মো. মিজানুর রহমান, সবুজ, মো. ফয়েজুর রহমান, আশিকুর রহমান মোল্লা, রাব্বি, ইয়াসির রাব্বি, মো. সাকিব শেখ ও নাঈমুর রহমান।
রায় ঘোষণার পর নিহত হাসিবুর রহমানের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, এই রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তাঁরা ভেবেছিলেন কয়েকজন আসামির ফাঁসি হবে। কিন্তু তা হয়নি, এ কারণে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী আইনজীবী রোমানা তানহা বলেন, হাসিবুর রহমান হত্যা মামলায় দীর্ঘ বিচার শেষে আদালত রায় দিয়েছেন। রায়ে ৫ জন আসামি খালাস পেয়েছেন। বাকি ২১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এলাকার মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্কের পাশের একটি দোকানের মধ্যে হাসিবুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করেন সন্ত্রাসীরা। এ সময় জুবায়ের ও রানা নামের হাসিবুরের দুই বন্ধুকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা হাবিবুর রহমান ঘটনার পরের দিন বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
চলতি বছরের ৭ মার্চ থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। পরে নির্ধারিত সময়ে বিচার শেষ না হওয়ায় আদালত মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করেন। ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন।