সাদিকের মনোনয়নপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জাহিদ ফারুকের আপিল
বরিশাল-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ ফারুক। জাহিদ ফারুক এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। আজ বুধবার জাহিদ ফারুকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কে বি এস আহমেদ কবির নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এই আপিল করেন। কবির বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি জাহিদ ফারুকের মনোনয়নপত্রের সমর্থনকারীও।
কে বি এস আহমেদ কবির আপিল আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে সন্ধ্যায় বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহিদ ফারুক এই আবেদন করেছেন। আবেদনে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর যুক্তরাষ্ট্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। এ তথ্য সাদিক আবদুল্লাহ হলফনামায় গোপন করেছেন। এ ছাড়া রাজধানীর উত্তরায় সাদিক আবদুল্লাহর নামে প্লট ও যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর স্ত্রীর নামে বাড়ি থাকলেও এসব তথ্য হলফনামায় গোপন করেছেন তিনি।
আহমেদ কবির বলেন, সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়ও দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি উল্লেখ করেননি। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলেও আইনি কোনো বাধানিষেধ নেই। কিন্তু সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার পরও রিটার্নিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন। আমরা বিষয়টি তখন নজরে এনেছিলাম। সেখানে বিষয়টি আমলে নেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ জন্য ইসিতে আপিল করা হলো। আশা করি, নির্বাচন কমিশন আপিল শুনানি করে সঠিক রায় দেবেন।’
গত জুনে বরিশাল সিটি নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যে বিভাজন দেখা দিয়েছিল, সংসদ নির্বাচনে তা চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য বিদায়ী মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক। এ অবস্থায় সাদিক আবদুল্লাহকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেয় মহানগর আওয়ামী লীগ।
৩ ডিসেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। ওই দিন সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে মৌখিক অভিযোগ করেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারী নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আফজালুল করিম। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বললেও ওই দিন এসংক্রান্ত কোনো লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল আটটা পর্যন্ত। আর ভোট গ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।