সাংবাদিক রব্বানির স্বজনদের আহাজারি থামছে না, দ্রুত বিচার দাবি

সাংবাদিক গোলাম রব্বানির স্বজনদের আহাজারি। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার গোমের চর গ্রাম থেকে
ছবি: প্রথম আলো

দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল বাড়িতে মানুষের ভিড়। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। কেউ কবরের পাশে, কেউ উঠানে, কেউ মাটির রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। স্বজনদের কেউ আহাজারি করছেন, কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার গোমের চর গ্রামে নিহত সাংবাদিক গোলাম রব্বানির বাড়িতে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়।

হত্যাকাণ্ডের চার দিন পার হয়েছে। তাঁর স্বজনদের আহাজারি থামেনি। গণমাধ্যমের কর্মী বা শহর থেকে কেউ বাড়িতে ঢুকতে দেখলেই তাঁরা আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন।

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি অনলাইন পোর্টাল ‘বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের’ জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি ওই উপজেলার নিলাখিয়া ইউনিয়নের গোমের চর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। তিন ভাইবোনের মধ্যে গোলাম রব্বানি ছিলেন বড়। তাঁর ছোট বোন কহিনুর আক্তার ও খালা আঞ্জুমান আরা বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, ‘আমগরে বুকের ধনরে ফিরিয়ে দাও।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কহিনুর আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার একমাত্র ভাইরে নিমর্মভাবে মাইরে ফেলল গো। অন্ধকারে চুরের মতো খুনি বাবু চেয়ারম্যান আমার ভাইয়ের মাইরে ফেলছে। আমগরে দেহার (দেখার) কেউ রইল না গো। আমরা খুনি বাবুর ফাঁসি চাই গো। আর কিচ্ছু চাই না। আমার ভাই কত ভালা আছিল। সারা দেশের মানুষের প্রতিবাদই প্রমাণ করে, আমার ভাইয়ের পুলাপানগরে কী হবে।’

কহিনুর আক্তার আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়ের অপরাধ কী? তাঁকে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলিয়ে কত কষ্ট দিয়ে মারা হলো। ওই খুনি চেয়ারম্যানের নিউজ করছে। নিউজ করলেই এইভাবে মাইরে ফেলবে? ওই খুনি টাকা দিয়ে রক্ষা না পায়। আমরা সারা দেশের মানুষের কাছে এটাই চাই।’

আরও পড়ুন

গোলাম রব্বানির খালা আঞ্জুমান আরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার একমাত্র বাবা। আমগরে বুকের ধন ছিল। আমগরে গোষ্ঠীর মাথা আছিল। এভাবে আমগরে বুকের ধনরে কাড়ে নিল। আমরা বিচার চাই। কোনো টাকা বা শক্তিতে যাতে খুনিরা রক্ষা না পায়।’

গত বুধবার রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রব্বানি। পথে বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় তাঁর ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় তাঁকে টেনেহিঁচড়ে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি ও ব্যাপক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গোলাম রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম, তাঁর ছেলেসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

আরও পড়ুন