পদ্মা নদীতে এবার ধরা পড়ল ২৫ কেজির বাগাড়, বিক্রি হলো ৩৫ হাজার টাকায়

রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে ধরা পড়েছে প্রায় ২৫ কেজি ওজনের বাগাড় মাছ।  পরে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটে মাছটি নিলামে বিক্রি হয়ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে এবার ২৫ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন একটি বাগাড় মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়েছে। গতকাল শনিবার সকালে মাছটি ধরা পড়ে। দুপুরের দিকে দৌলতদিয়া ঘাটে নিলামে এটি ৩২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। বিকেলের দিকে বাগাড়টি চুয়াডাঙ্গার এক ব্যবসায়ী ৩৫ হাজার টাকায় কিনে নেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকালে মানিকগঞ্জের জাফরগঞ্জের জেলে গোপাল হালদার নৌকা-জাল নিয়ে মাছ শিকারে বের হন। পদ্মা নদীতে জাল ফেলে ভাটিতে ভাসতে থাকেন। ছয় থেকে সাত কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর মজলিশপুর এলাকায় জালে ২৫ কেজি ওজনের বাগাড়টি ধরা পড়ে। মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে কেছমত মোল্যার আড়তে নেওয়া হয়। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে বাগাড়টি কেনেন মাছ ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্যা।
দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্যা আজ রোববার সকালে বলেন, বাগাড়টির ওজন ছিল প্রায় ২৫ কেজি। ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে এটি ৩২ হাজার টাকায় কিনে নেন। দুপুরের দিকে চুয়াডাঙ্গার এক ব্যবসায়ীর কাছে প্রতি কেজি ১০০ টাকা লাভে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করি। গতকাল বিকেলেই বাগাড় মাছ তাঁর কাছে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, বাগাড় শিকার করা, ধরা বা বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার এবং প্রকাশ্যে বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। ইলিশ, পাঙাশ, রুই ও কাতলা মাছের সঙ্গে পদ্মা ও যমুনা নদীতে কোনো বাধা ছাড়াই জেলেরা শিকার করছেন বাগাড়।  

স্থানীয় কয়েকজন মৎস্যজীবী জানান, মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বাগাড় মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়েছে। এর মধ্যে গত দুই মাসে ৪০টির বেশি বাগাড় ধরা পড়েছে। রাজবাড়ী ছাড়াও পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ অঞ্চলের জেলেদের বড় বড় ফাঁস জালে পাঙাশ, রুই, কাতলার পাশাপাশি বাগাড় ধরা পড়ছে।

আরও পড়ুন

গোয়ালন্দের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজবাড়ী সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, বর্তমানে নদীতে বর্ষার পানি বাড়ায় অনেক মাছের সঙ্গে বাগাড় রয়েছে। বাগাড় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২–এর আওতাভুক্ত হওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারি না। মৎস্য সংরক্ষণ আইনের আওতায় আনতে বিভিন্ন মহলে উত্থাপন হচ্ছে। বন বিভাগের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে।