রিমান্ডে নির্যাতন না করার কথা বলে নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত চাইলেন শিক্ষার্থীরা

রিমান্ডের নির্যাতন না করার কথা দিয়ে নেওয়া ঘুষ ফেরত চেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আজ রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে প্রেসব্রিফিংয়ে এই দাবি জানান তাঁরা
ছবি: প্রথম আলো

সাতক্ষীরায় রিমান্ডে নির্যাতন না করার কথা বলে নেওয়া ঘুষের দুই লক্ষাধিক টাকা পুলিশের কাছে ফেরত চেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। একই সঙ্গে মুঠোফোনসহ তাঁদের বিভিন্ন জিনিসপত্র ফেরত চেয়েছেন তাঁরা।

আজ রোববার দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন শিক্ষার্থীদের আইনজীবী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

আইনজীবী শহীদ হাসান বলেন, তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রদের মামলায় বিনা মূল্যে আইনি সহায়তা দিয়েছেন। বিবেক আর মানবতার খাতিরে তাঁরা এ কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ছাত্রদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় রিমান্ডের নামে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন সদর থানার তৎকালীন ওসি মহিদুল ইসলাম, তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মোল্যা মো. সেলিমসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। অনতিবিলম্বে টাকা ফেরত না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাতক্ষীরার অন্যতম সমন্বয়ক ইমরান হোসেন জানান, তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া দুটি মামলা এখনো চলমান। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী অনতিবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, অন্যতম সমন্বয়ক ইমরান হোসেনের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা, শাহারুজ্জামানের কাছ থেকে ৬ হাজার, কাজী সাকিবের কাছ থেকে ৫ হাজার, ইব্রাহিম হোসেনের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ নেন পুলিশ কর্মকর্তা মোল্যা মো. সেলিম। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি তারেক বিন আব্দুল আজিজ শিক্ষার্থী মঈনুল ইসলামের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা ঘুষ নেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম শিক্ষার্থী এস এম রোকনুজ্জামানের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। এভাবেই পুলিশ কর্মকর্তারা রিমান্ডে থাকা শিক্ষার্থীদের নির্যাতন থেকে রেহাই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নেন। এ ছাড়া পুলিশ শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত কমপক্ষে ১০টি স্মার্টফোন কেড়ে নেন।

ওই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমন করতে সদর থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ। একটি মামলায় আসামি করা হয় ১৮ জনকে ও আরেকটি মামলায় আসামি করা হয় ১৩ জনকে। প্রথম মামলায় ১৩ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন সদর থানা–পুলিশের পরিদর্শক মোল্যা মো. সেলিম।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।