আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে না: মির্জা আব্বাস

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মানিকগঞ্জ শহরে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আজ শনিবার বিকেলে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ল কলেজ মাঠেছবি: প্রথম আলো

‘খালেদা জিয়াবিহীন কখনো গণতন্ত্র চলতে পারে না, হতে পারে না। আর আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে না। যেখানে আওয়ামী লীগ আছে, সেখানে গণতন্ত্র নাই। যেখানে গণতন্ত্র আছে, সেখানে আওয়ামী লীগ থাকতে পারে না। তাই দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে যেকোনো মূল্যে মুক্ত করতে হবে। তাঁর মুক্তির ওপর নির্ভর করছে এ দেশের মানুষের গণতন্ত্র, এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা ও দেশের সার্বভৌমত্ব।’

আজ শনিবার বিকেলে মানিকগঞ্জ শহরে বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ল কলেজ মাঠে এই সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির (ঢাকা বিভাগ) সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়্যেদুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ ও নজরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আজাদ হোসেন খান প্রমুখ।

উপস্থিত তরুণ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি, তাঁদের অনেক দুঃখ ও আফসোস আছে। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ করতে পারেননি, তাঁরা এখন দেশ রক্ষায় অবতীর্ণ হবেন। যাঁরা এখন দেশের জন্য কিছু করতে না পারেন, তাঁরা দেশের জন্য কখনোই কিছু করতে পারবেন না।

বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দী, অসুস্থ। এ অবস্থায় আমরা যদি এখন বসে থাকি, তাহলে দেশনেত্রী কোনো দিন মুক্তি পাবেন না; এ দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। এ দেশের স্বাধীনতা, এ দেশের সার্বভৌমত্ব কখনো টিকে থাকবে না। একবার যুদ্ধ করেছিলাম দেশ স্বাধীন করার জন্য; আরেকটিবার যুদ্ধ করতে চাই স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য।’

খালেদা জিয়া জেলে কেন—প্রশ্ন রেখে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘চোর-ডাকাত-মদমাশ, ছিনতাইকারী, লুটেরা, বাটপাররা মুক্তি পেয়ে যায়। মখা আলমগীরের মতো ব্যাংক লুট করে মুক্তি পেয়ে গেল! হাজি সেলিমের মতো লোক মুক্তি পেয়ে যায়! বেনজীররা (পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ) দেশ ছেড়ে চলে যায়! আমার নেত্রী (খালেদা জিয়া) কেন জেলে থাকবে? কী অপরাধ করেছেন উনি? দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কোনো অপরাধ নেই, তিনি নিরপরাধ।’

শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের বিষয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কার জন্য কোটা, কিসের জন্য কোটা? যে লেখাপড়া ভালো করবে, সে আগে যাবে। যে লেখাপড়ায় ভালো করবে, সে চাকরি পাবে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কোটা হলে আপত্তি নাই। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা কয়জন বেঁচে আছেন? ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে আমাদের আপত্তি আছে। তবে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেওয়া হোক, এটা আমার কাম্য। মেধাভিত্তিক চাকরি হতে হবে। আর তা না হলে এই দেশ মেধাশূন্য হয়ে যাবে।’

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিষয়ে সরকারের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পেনশন স্কিম নিয়ে সরকার শিক্ষকদের দিয়ে ট্রায়াল দিচ্ছে। বড় চোরদের (ব্যাংক লুটেরা) বিশাল বিশাল চুরি করার সুযোগ দিয়ে দিলেন। আর পেনশন স্কিম করেন! এই পেনশন স্কিমের টাকা যাবে কোথায়?’