তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের আবাদি জমি বসুন্ধরা গ্রুপকে বন্দোবস্ত না দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
রংপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নে তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের আবাদি জমি বসুন্ধরা গ্রুপকে বন্দোবস্ত না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আজ শনিবার দুপুরে রংপুর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এলাকাবাসী সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বসতভিটা ও আবাদি জমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নের তিস্তা নদীবেষ্টিত এলাকার অনেক জমি অব্যাহত নদীভাঙনের ফলে খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। এই সম্পত্তিতে বংশপরম্পরায় অত্র এলাকার মানুষ চাষাবাদ করে আসছেন। পূর্বপুরুষের কাছ থেকে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত জমিতে ধান, আলু, মিষ্টিকুমড়া, চীনাবাদাম, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। নদীভাঙনসহ প্রাকৃতিক নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েই তাঁদের জীবন অতিবাহিত হয়। সম্প্রতি বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের নামে ছালাপাক ও আলাল মৌজার চরে খাস খতিয়ানভুক্ত কৃষিজমি নেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রতীকী মূল্যে বন্দোবস্তের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছে।
এর ফলে এলাকার মানুষ উদ্বিগ্ন। কথিত শিল্পায়নের নামে তা সুস্পষ্টভাবে কৃষিজমি ধ্বংসের নামান্তর। একটি প্রতিষ্ঠান কিংবা গোষ্ঠীর মুনাফার শিকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ বাপ-দাদার ভিটামাটি ছাড়া হতে পারেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিজমি বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের নামে এলাকার কোনো খাসজমি দীর্ঘমেয়াদি কিংবা স্বল্পমেয়াদি বন্দোবস্ত না দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এলাকাবাসী ভিটামাটি ও আবাদি জমি রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করেছেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের এই প্রকল্পের দায়িত্বে আছেন মাসুদুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তিস্তার চরাঞ্চলে মানুষের দালিলিক জমি কেনা হয়েছে প্রায় ৩০০ একর। সেই সঙ্গে প্রায় ৯৮০ একর চরের জমি বন্দোবস্তের জন্য আট মাস আগে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। কোনো মানুষের জমি দখল করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, ‘আমি সবে যোগদান করলাম। পুরো বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখব।’