তেঁতুলিয়ায় আ.লীগ-বিএনপির সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ১৪, পরে চেয়ারম্যানের বাড়ি ও গাড়িতে আগুন
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলনের বাড়ি ও ব্যক্তিগত গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের সিপাইপাড়া বাজার ও পাগলীডাঙ্গী এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তেঁতুলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কুদরত-ই-খুদার একদল সমর্থক সিপাইপাড়া বাজারে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের দোকানপাট ও লোকজনের ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যেরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এরপর দ্বিতীয় দফায় বিএনপির লোকজন একত্র হলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৪ জন আহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে বেলা একটার পর একদল লোক পাগলীডাঙ্গী এলাকায় কুদরত-ই-খুদার বাড়ি ও গাড়িতে আগুন দেয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গতকাল (রোববার) থেকে জেলার বাইরে আছি। শুনেছি, সিপাইপাড়া বাজারে আজ (সোমবার) দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি সেই বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। আজ বেলা একটার পর হঠাৎ একদল লোক আমার বাড়ি ও গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ সময় বাড়ির জিনিসপত্র লুটপাটও করেছে তাঁরা।’
তবে কুদরত-ই-খুদার এমন দাবিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, কুদরত-ই-খুদা লোক ভাড়া করে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের দোকানে হামলা চালিয়েছেন। এমনকি তাঁদের মারধরও করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান নিজের লোকজন দিয়েই তাঁর বাড়ি ও গাড়িতে আগুন লাগিয়েছেন।
বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ আলী বলেন, ‘মিলন (কুদরত-ই-খুদা) ভাড়া করা লোকজন ওই হামলা ও মারধরের সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া তাঁরা আমাদের (বিএনপির) দলীয় কার্যালয়টিও ভাঙচুর করেছে। ওই হামলা তাঁদের পূর্বপরিকল্পিত ছিল। মিলন চেয়ারম্যান নিজের লোকজন দিয়েই তাঁর বাড়ি ও গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে।’
ঘটনার পর পর স্থানীয় বাসিন্দারা সাত ব্যক্তিকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। ওই সাতজনের মধ্যে তিনজন আহত বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায়। তিনি বলেন, আহত হওয়ায় তাঁদের তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
ওসি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জেনেছি যে প্রথম দফায় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু লোকজন সিপাইপাড়া বাজারে জড়ো হয়ে মহড়া দিচ্ছিল। একপর্যায়ে তাঁরা বিএনপির লোকজনকে মারধর করেছে।’