শম্ভুর মঞ্চে নাশকতা মামলার পলাতক আসামি বিএনপির নেতা, ভোট চাইলেন নৌকায়
বরগুনা-১ (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর একটি জনসভার মঞ্চে নাশকতার মামলার পলাতক আসামি সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ওরফে রাজাকে দেখা গেছে। তিনি জনসভায় বক্তব্য দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোটও চেয়েছেন।
আজ রোববার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের গৌরীচন্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন শরীফের সমালোচনা করে আসন্ন নির্বাচনে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান মতিউর রহমান। তিনি বদরখালী ইউনিয়ন থেকে নৌকায় সর্বোচ্চ ভোট দেওয়া হবে বলে জানান। যদি না দিতে পারেন, তাহলে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে তিনি অব্যাহতি নেবেন বলেও অঙ্গীকার করেন।
মতিউর রহমান গত নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি জেলা বিএনপির (হালিম-নজরুল কমিটির) সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া বরগুনা জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। জেলা বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।
সদর থানা সূত্র জানায়, গত নভেম্বরে বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে জেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। মামলা নম্বর জিআর ৩৫৪/২৩। মামলায় মতিউর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী সদর থানার উপপরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আবু হানিফ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, এসআই নুরুজ্জামান মামলাটি তদন্ত করছেন।
মতিউর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। বদরখালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা স্বপন শরীফ বলেন, ‘আমি নৌকার প্রার্থী ছিলাম। আমি যাতে নির্বাচনে জিততে না পারি, সে জন্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বিএনপির মতিউর রহমানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করেন এবং নির্বাচনে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে আমাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। সরকার পতনের আন্দোলনে যাঁরা জড়িত, সেই বিএনপির নেতাদের এখন নিজের স্বার্থে মঞ্চে উঠিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্বাস হোসেন ওরফে মন্টু মোল্লা বলেন, ‘জনগণের চাপে রাজা আমাদের জনসভায় এসেছেন এবং বক্তব্য দিয়েছেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেননি।’ নাশকতা মামলার আসামির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন ভোট দরকার।’
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আবদুল হালিম বলেন, ‘মতিউর রহমান মামলার পলাতক আসামি। আমরা তাঁর ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করব।’ তবে স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, বেশ কয়েক দিন ধরে মতিউর রহমান বরগুনা শহরে প্রকাশ্যে ঘুরলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।