কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা জামাল হত্যায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন

মৃত্যুদণ্ড
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনকে (৩৮) হত্যার দায়ে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার একটি আদালত। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন। কুমিল্লার সরকারি কৌঁসুলি আইনজীবী জহিরুল ইসলাম সেলিম প্রথম আলোকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলায় মৃত্যুদণ্ড আসামিরা হলেন চৌদ্দগ্রাম আলকরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আত্তয়ামী লীগ নেতা মো. ইসমাইল হোসেন (বাচ্চু), আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের সালাউদ্দিন, আবদুর রহমান, মফিজুর রহমান খন্দকার, জিয়াউদ্দিন শিমুল, জাহিদ বিন শুভ, রেজাউল করিম (বাবলু), রিয়াজ উদ্দিন মিয়াজী ও মমতা আমির হোসেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের নুরুল আলম, কফিল উদ্দিন, নুরুন্নবী সুজন, ইকবাল আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান খন্দকার, মোশারেফ হোসেন, মো. আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী হোসেন।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ১৮ জনের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৯ জনের মধ্যে ১ জন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ জনই অনুপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া পাঁচজনকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন আলকরার কুলাসার গ্রামের নজরুল ইসলাম, শিমুল আজিম উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন সোহেল, আতিকুর রহমান নান্টু ও ইউসুফ হারুন মামুন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পদুয়া এলাকায় আলকরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনকে কুপিয়ে, পায়ের রগ কেটে, গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত জামালের বড় বোন জোহরা আক্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। মামলায় আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুকে ১ নম্বর আসামি করা হয়।

মামলায় বলা হয়, ইসমাইল হোসেন ওরফে কালা বাচ্চুর চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় যুবলীগ নেতা জামাল উদ্দিনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে জামাল উদ্দিনের ওপর হামলা করে আহত করে। এ ঘটনায় জামাল উদ্দিন নিজে বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলা করার পর চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে জামালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরপর তাঁকে হত্যা করা হয়।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) জহিরুল হক সেলিম বলেন, মামলায় ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন ও মামলা থেকে পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।