রাজবাড়ীতে প্রতিমা ভাঙচুর: বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণ গ্রেপ্তার, পরে পরিবারের জিম্মায়
রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়া সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করার ঘটনায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই তরুণ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।
রানাপদ সরকার (২৬) নামের ওই তরুণ রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামের রতন কুমার সরকারের ছেলে। গত মঙ্গলবার ভোরে ওই প্রতিমা ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যার দিকে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি সাধন দাস বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে প্রতিমা মেরামত করে বুধবার পূজা শুরু হয়।
এ সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মুকিত সরকার জানান, প্রতিমা ভাঙচুর করার খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক দল আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে। এতে দেখা যায়, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে কমলা রঙের টি–শার্ট এবং কালো রঙের ট্রাউজার পরিহিত একজন পূজামণ্ডপ এলাকায় সন্দেহভাজন ঘোরাফেরা করছেন। পরে ডিবি পুলিশ রানাপদ সরকারকে গ্রেপ্তার করে।
গতকাল রাত ১০টায় জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের সজ্জনকান্দা এলাকা থেকে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রানাপদ সরকারকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি প্রতিমা ভাঙচুরের কথা স্বীকার করে। গতকাল বিকেলে পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠায়। রানাপদ জানান, পূজার ফুল সংগ্রহ করতে মঙ্গলবার ভোরে তিনি সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়ায় যান। ফুল সংগ্রহ শেষে কৌতূহলবশত পূজামণ্ডপে যান। এ সময় ধাক্কা লাগলে তিনি প্রতিমা গণেশের মাথা ভেঙে ফেলেন। পরে অবচেতন মনে অন্য প্রতিমার মুখ ক্ষতিগ্রস্ত করেন।
অনুসন্ধান করে পুলিশ জানতে পারে, রানাপদ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী। উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে মাসিক ভাতাভোগী সদস্য তিনি। পরে রাজবাড়ী সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) মূলে রানাপদ সরকারকে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২–এ হাজির করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এসরাকুল ইসলাম জানান, আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাতেই রানাপদ সরকারকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।