ফেনীতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৬৬২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের
ফেনীর মহিপাল এলাকায় গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গুলিবর্ষণে কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৬৬২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। ফেনী সদর মডেল থানায় গতকাল বুধবার মামলাটি করেছেন নিহত ব্যক্তির ভাই মাহমুদুল হাসান।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ফেনী-৩ আসনের সাবেক এমপি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামসহ ১৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী মাহমুদুল হাসান উল্লেখ করেন, ৪ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল উড়ালসেতুর নিচে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তাঁর ভাই মাহবুবুল হাসান অংশ নেন। ওই দিন বেলা দেড়টার দিকে মহিপাল উড়ালসেতু এলাকায় প্রধান আসামির ইন্ধনে অন্য আসামিরা ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেন। সেখানে মাহবুবুল হাসান গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন দিন পর তিনি মারা যান।
মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতে তাঁর ভাই নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলা করেছেন।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৬৬২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ফেনীর মহিপালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১১ জন নিহত হন। অন্তত অর্ধশত ছাত্র আহত হন। তাঁদের মধ্যে সোনাগাজী উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের চর চান্দিয়া গ্রামের হাফেজ নোমানের ছেলে মাহবুবুল হাসান গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ওই দিনের ঘটনায় এটিসহ ৭টি মামলায় প্রায় দুই হাজারের বেশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।