বাস, ট্রাক, পিকআপে আসছেন মুসল্লিরা, ভিড় বাড়ছে ইজতেমা মাঠে
দিবাগত রাত ১টা। গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা মাঠসংলগ্ন কামারপাড়া-মন্নুগেট সড়কে তখন হাজারো মুসল্লির ভিড়। এর মধ্যেই একের পর এক বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান এসে থামছে সড়কের বিভিন্ন জায়গায়। সেখান থেকে দলে দলে নামছেন মুসল্লিরা। কারও হাতে ব্যাগ, কারও কাঁধে গাট্টি-বোঁচকা। সবাই প্রবেশ করছেন ইজতেমা মাঠে। তাঁদের পদচারণে গভীর রাতেও গমগম করছে সড়কটি।
দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় যোগ দিতে গতকাল বুধবার সারা রাত এভাবেই ইজতেমা মাঠে আসেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসল্লিরা। আজ বৃহস্পতিবারও আসছেন মুসল্লিরা। তাঁদের পদচারণে ভিড় বাড়ছে ইজতেমা মাঠ ও এর আশপাশের এলাকায়। বিকেলের মধ্যে মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হবে বলে আশা করছেন আয়োজকেরা।
টঙ্গীর তুরাগতীরে আগামীকাল শুক্রবার ফজরের নামাজের পর শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। তাবলিগ জামাতের বিরোধের কারণে এবারও ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই ভাগে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথম পক্ষ বা মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করেছেন ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি। পাঁচ দিন বিরতির পর শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় পক্ষ বা মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনুসারীদের ইজতেমা। সে হিসেবে এখন যাঁরা মাঠে আছেন বা আসছেন, সবাই সাদ কান্ধলভির অনুসারী।
গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত ইজতেমা মাঠসংলগ্ন কামারপাড়া-মন্নুগেট সড়কে অবস্থান করে দেখা যায়, পুরো সড়কে প্রচুর মুসল্লিরা জটলা। একের পর এক বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান থেকে এসে নামছেন মুসল্লিরা। গাড়ি থেকে নেমে দল বেঁধে প্রবেশ করছেন ইজতেমা মাঠে।
গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকা থেকে আসা একটি দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় ইজতেমা মাঠের ২ নম্বর ফটকের সামনে। তাঁরা ৭০ জন এসেছেন ট্রাকে করে। দলটির নেতৃত্বপর্যায়ের মুরব্বি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাসা কাছে। তবু আগেভাগে চলে আসছি। কারণ, পরে এলে ঠিকমতো জায়গা পাওয়া যাবে না। এখানে এসে সবাইকে দেখে খুব ভালো লাগছে।’ তিনি বলেন, তিন বছর পর আবার ইজতেমা হচ্ছে। প্রথম পর্ব শেষ হতেই তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন কখন মাঠে আসবেন। এরপর সবার সঙ্গে আলোচনা করে বুধবার আসার সিদ্ধান্ত হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, পুরো ইজতেমা মাঠের চারপাশে আটটি সড়ক, পাঁচটি ভাসমান সেতুসহ মোট ১৩টি প্রবেশপথ রাখা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি প্রবেশপথেই মুসল্লিদের জটলা। তাঁদের সবার সঙ্গে ব্যাগ আর গাট্টি–বোঁচকা। মুসল্লিরা মাঠে ঢুকেই নিজ নিজ খিত্তায় (এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত জায়গা) অবস্থান নিচ্ছেন।
এদিকে আজ সন্ধ্যার আগেই পুরো মাঠ ভরে যাওয়ার আশা প্রকাশ করছেন সাদ অনুসারীদের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি মো. মিজানুর রহমান। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইজতেমায় যোগ দিতে বুধবার সকাল থেকেই আমাদের সাথিরা আসা শুরু করেছেন। আজ বিকেলের মধ্যেই পুরো মাঠ কানায় কানায় ভরে যাবে। সবার সহযোগিতায় আমরা খুব সুন্দর একটা ইজতেমা করব।’