দুই বছর পর তুরাগপারে আবারও মুসল্লিদের ভিড়

তিন দিনের ‘জোড়’ ইজতেমা পালন করতে তুরাগপারে সমবেত হয়েছেন ঢাকা ও আশপাশের ৮ জেলার মুসল্লিরা। শুক্রবার দুপুরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

করোনা মহামারির কারণে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর ১৩ জানুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এ উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকালে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ইজতেমা মাঠে তিন দিনের ‘জোড়’ ইজতেমা (ইজতেমার আগে প্রস্তুতিমূলক সমাবেশ) শুরু হয়েছে। এতে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের আট জেলার মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন।

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদের কারণে এবারও আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাবলিগ জামাতের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ১৩, ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি ইজতেমা করবেন। আর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি। আজ সকালে তিন দিনের ‘জোড়’ ইজতেমা শুরু করেছেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরো মাঠে মুসল্লিদের আনাগোনা। কেউ রান্নাবান্না, কেউ গোসল, কেউবা মাঠ প্রস্তুতের কাজে ব্যস্ত। মাঠের এক পাশে টানানো হয়েছে বিশাল শামিয়ানা। তার নিচে একটি মঞ্চে ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে বয়ান করছেন বক্তারা। উপস্থিত মুসল্লিরা মনোযোগ দিয়ে বয়ান শুনছেন। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি পড়া হচ্ছে বিভিন্ন ইসলামি বই।

টঙ্গীর কামারপাড়া সড়ক থেকে পুলিশ কন্ট্রোল বক্সের ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই ১০ ব্যক্তিকে বাঁশ পুঁতে শামিয়ানা টানানোর কাজ করতে দেখা গেল। তাঁরা জানালেন, ২৩ জনের একটি দল নিয়ে তাঁরা নরসিংদী থেকে এসেছেন। মো. আবদুল মোত্তালিব নামের এক সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, দুই বছর ইজতেমা না হওয়ায় মাঠের অনেক জায়গা এবড়োখেবড়ো হয়ে আছে। তাই মাঠ প্রস্তুতে একটু বেশি পরিশ্রম করতে হচ্ছে। তবে দীর্ঘদিন পর সবাই একত্র হতে পেরে তাঁরা আনন্দিত।

রাজধানী ও আশপাশের গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ মোট আট জেলা নিয়ে ‘জোড়’ ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন আয়োজকেরা। এসব এলাকার কয়েক হাজার মুসল্লি এতে অংশ নিয়েছেন। আয়োজকদের অন্যতম মো. মাহফুজুল হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, রোববার রাত বা সোমবার ফজরের নামাজের পর বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে ‘জোড়’ শেষ হবে। ১৩ জানুয়ারি মূল ইজতেমার জন্য মুসল্লিরা আবার একত্রিত হবেন। দীর্ঘদিন পর ইজতেমা হওয়ায় তাঁরা খুশি।

সার্বিক বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণভাবে ‘জোড়’ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তাঁদের সব কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।